বাংলাদেশে রাশিয়ান রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনালের গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে রাশিয়া প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সহযোগিতা কামনা করেছে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি. খোজিন এ অনুরোধ জানান।
গ্যাজপ্রম ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি ভোলার গ্যাস মজুত বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরও পাঁচটি নতুন কূপ চিহ্নিত করে। রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বৈঠকে জানান, এই অনুসন্ধান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাশিয়া বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা আশা করছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ভোলায় নতুন গ্যাস কূপ খননের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতে আরও পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
বৈঠকে রাশিয়া-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা হয়। বিশেষ করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে রাশিয়ার গম সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ মিশরের পরেই রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম গম আমদানিকারক দেশ হিসেবে উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৩ লাখ টন রাশিয়ান গম আমদানি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬ দশমিক ২৩ লাখ টন সরকারি পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি. খোজিন বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ৩০ হাজার টন এমওপি সার সরবরাহের প্রস্তুতির বিষয়েও অবহিত করেন। তিনি আরও জানান, রাশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে, বিশেষ করে কৃষি ও জাহাজ নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদা বাড়ছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ সময়কালে রাশিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসার সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুসংহত হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সংকটময় সময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্য রাশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন এবং ভবিষ্যতে অর্থনীতি ও জ্বালানি খাতে যৌথ উদ্যোগ বাড়ানোর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?