পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করতে ইরানের উপকূলে সামরিক মহড়া চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া, চীন ও ইরান। চলতি সপ্তাহেই এই মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো।
গত কয়েক বছর ধরে আমেরিকার আধিপত্য মোকাবিলার অভিন্ন লক্ষ্যে এই তিন দেশ একাধিকবার একই ধরনের মহড়া পরিচালনা করেছে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি এবং নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইরান, রাশিয়া ও চীন ঘনিষ্ঠ সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ওমান উপসাগরে অবস্থিত চাবাহার বন্দরে আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে যৌথ সামরিক মহড়া। তবে এই মহড়া কতদিন চলবে বা কখন শেষ হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
খবরে আরও জানানো হয়েছে, চীন ও রাশিয়ার শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ, সহায়ক জাহাজ, এবং ইরানের নৌবাহিনীর সেনারা এই মহড়ায় অংশ নেবে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর যুদ্ধজাহাজও অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে এই মহড়াটি পরিচালিত হবে, যার প্রধান লক্ষ্য হবে সমুদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা এবং অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বাড়ানো।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মস্কোর হয়ে এই মহড়ায় অংশ নেবে দুটি কর্ভেট যুদ্ধজাহাজ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের একটি ট্যাঙ্কার। মহড়ার অংশ হিসেবে জাহাজ ক্রুরা জাহাজ উদ্ধার অভিযান, সমুদ্রে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমের অনুশীলন করবে। পাশাপাশি, সমুদ্র এবং আকাশের লক্ষ্যবস্তুতে কামানের গোলাবর্ষণও করা হবে।
এই মহড়ায় পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকবে বেশ কয়েকটি দেশ, যার মধ্যে রয়েছে আজারবাইজান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওমান, কাজাখস্তান, পাকিস্তান, কাতার, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কা।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছে, চাবাহার বন্দরে অনুষ্ঠিতব্য এই মহড়ায় চীন একটি বিমান বিধ্বংসী রণতরী এবং একটি সরবরাহ জাহাজ মোতায়েন করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই যৌথ সামরিক মহড়া শুধুমাত্র অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে না, বরং এটি একটি কৌশলগত বার্তা বহন করছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতে ইরান, রাশিয়া ও চীন যৌথভাবে কাজ করছে, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করছে।
এই মহড়ার মাধ্যমে ভারত মহাসাগরের কৌশলগত এলাকায় নিজেদের সামরিক উপস্থিতি সুসংহত করতে চাইছে এই তিন দেশ। বিশেষ করে, ইরান পশ্চিমাদের চাপ মোকাবিলা করতে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদার করছে, যা বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির ভারসাম্যে নতুন রূপ দিতে পারে বলে ধারণা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?