ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাঙমা বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি করিডোর চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এই করিডোর চালু হলে মেঘালয়, আসামের বরাক উপত্যকা এবং ত্রিপুরার সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব ৬০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার কমে যাবে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
শুক্রবার শিলংয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাঙমা এই করিডোরের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত করিডোরটি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বন্দরশহর হিলি পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। দুই শহরের সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে, যা এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এই করিডোরের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বা তারও বেশি। এটি শুধু মহেন্দ্রগঞ্জ নয়, মেঘালয়ের তুরা, বাঘমারা, ডালু ও ডাউকি জেলার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করতে পারে। সাঙমার মতে, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্য ও সংযোগ আরও মজবুত হবে।
তিনি আরও বলেন, “যদি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে হিলি ও মহেন্দ্রগঞ্জের মধ্যে একটি সংযোগ করিডোর নির্মাণ করা হয়, তাহলে এটি হবে একটি বিকল্প অর্থনৈতিক করিডোর। এর ফলে পরিবহন খরচ হ্রাস পাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য নতুন মাত্রা পাবে।”
তবে করিডোর বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কনরাড সাঙমা জানান, “এটি নির্ভর করছে বাংলাদেশের সরকারের ওপর। এর আগেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বদলে যাওয়ার কারণে আলোচনার অগ্রগতি থমকে গেছে। আমরা এ ইস্যুটি পুনরুজ্জীবিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক সংযোগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা নতুন নয়। পূর্বে দিল্লির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য ট্রানজিট সুবিধা চাওয়া হয়েছিল, যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনাও হয়েছে। কনরাড সাঙমার প্রস্তাবিত নতুন করিডোর কেবল পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের সংযোগই জোরদার করবে না, বরং এটি বাংলাদেশের জন্যও নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়। বর্তমান আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কিভাবে এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটিই ভবিষ্যতের করিডোর বাস্তবায়নের মূল চাবিকাঠি হয়ে থাকবে।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?