মরুভূমিতে বহু আশায় পানির জন্য দৌড়ানোর পর যখন কোন ব্যক্তি গিয়ে দেখে এ পানি নয় বরং বালুর বুকে আলোর খেলায় জেগেছে মরীচিকা ছল। তখন তার আর কিছুই করার থাকে না।
হতাশ হওয়ার শেষ ইচ্ছেটুকু খুঁয়ে তিনি আর নিরাশ হতে পারেন না। সব ছেড়ে দেন প্রকৃতির উপর। ভারতেরও হয়েছে সেই দশা।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনায় ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিকবার বাংলাদেশ সরকারকে এই বিষয়ে সতর্ক করেছে এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে, বাংলাদেশ সরকার এই ঘটনাগুলোকে ‘অতিরঞ্জিত’ বা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতারা মনে করেন, বাংলাদেশ সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিজেপির পলিসি রিসার্চ সেলের অনির্বাণ গাঙ্গুলির মতে, “আজকের বাংলাদেশ গড়ে তোলার পেছনে সে দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদেরও বিরাট অবদান আছে, সেই সত্যিটাই যেন ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
এছাড়া, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা ভলকার টুর্ক এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে, বাংলাদেশ সরকার এই ঘটনাগুলোকে ‘ফেক নিউজ’ বা ‘রাজনৈতিক হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করে বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। তবে, ট্রাম্প এই বিষয়ে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি, যা ভারতের জন্য হতাশাজনক ছিল। এতে বোঝা যায়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে চাপ দেওয়ার প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
এই প্রেক্ষাপটে, ভারত এখন বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনে মনোযোগী হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সাথে ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক উভয় দেশের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থে সহায়ক হবে।
তবে, সুসম্পর্ক স্থাপনে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সীমান্ত সমস্যা, পানি বণ্টন, এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এই সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। তাই, উভয় দেশের উচিত পারস্পরিক সম্মান ও সমঝোতার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা।
সারসংক্ষেপে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে নালিশে ব্যর্থ হওয়ার পর ভারত এখন বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী।

জয় ও নিঝুম মজুমদারের এই আহ্বানকে দেশবিরোধী বলে মনে করেন ?