শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

অর্থনীতি

১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি জনতা ব্যাংকে

অবশেষে বড় অঙ্কের ঋণখেলাপি হলেন বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি খেলাপির বাইরে ছিলেন। কিন্তু আর রক্ষা হলো না। এই প্রথমবারের মতো ঋণখেলাপির তালিকাভুক্ত করা হলো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান শুধু জনতা ব্যাংকের এক শাখা থেকেই ঋণের নামে বের করেছেন প্রায় […]

নিউজ ডেস্ক

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭

অবশেষে বড় অঙ্কের ঋণখেলাপি হলেন বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি খেলাপির বাইরে ছিলেন। কিন্তু আর রক্ষা হলো না। এই প্রথমবারের মতো ঋণখেলাপির তালিকাভুক্ত করা হলো।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান শুধু জনতা ব্যাংকের এক শাখা থেকেই ঋণের নামে বের করেছেন প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। যা ওই শাখার মোট ঋণের ৬৫ শতাংশ।

এরই মধ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি খেলাপি হয়ে গেছে। এসব ঋণের অধিকাংশই ছিল বেনামি। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নিয়ে বেনামি ঋণগুলো তার নামে সংযুক্ত করেছে। চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন ও জনতা ব্যাংকের নথি ঘেঁটে পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে এক ব্যাংকার  জানান, বেনামি ঋণের জনক ছিলেন সালমান এফ রহমান। যা ধীরে ধীরে পুরো ব্যাংক খাতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের বেশিরভাগ ঋণই বেনামি। এখন প্রায় সব অসাধু ব্যবসায়ীর বেনামি ঋণ রয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে লুটপাটের বেশিরভাগই বেনামি ঋণ। অর্থাৎ ঋণ নেন একজন, ভোগ করেন অন্যজন। প্রকৃত সুবিধাভোগী থাকেন সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত সব ধরনের বেনামি ঋণ খুঁজে বের করা। তা না হলে ব্যাংক খাত টিকবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বেক্সিমকো গ্রুপ এবং গ্রুপ সম্পর্কিত মোট ৩২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ২৬ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়। এছাড়া সুকুক বন্ডের নামে নেওয়া হয় ২২০ কোটি টাকা। এসব ঋণের বেশিরভাগই ২০২১, ২২ ও ২৩ সালে নেওয়া।

এর মধ্যে অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস ৬০৯ কোটি, এ্যাপলো অ্যাপারেলস ৭৯৮ কোটি, অটামলুপ অ্যাপারেলস ৮২২ কোটি, বে সিটি অ্যাপারেলস ৮৯২ কোটি, বেক্সিমকো লিমিটেড ২ হাজার ২১৬ কোটি, বেক্সিমকো পিপিই ২৬ কোটি, বেক্সিমকো ফ্যাশনস ৯৩৬ কোটি, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস ৮৮৫ কোটি, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস ৯৬১ কোটি, কজি অ্যাপারেলস ৯০৬ কোটি, ক্রিসেন্ট ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন ১ হাজার ৬৯০ কোটি, এসকর্প অ্যাপারেলস ৮১৯ কোটি, অ্যাসেস ফ্যাশনস ১ হাজার ৭৫৮ কোটি, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস ১ হাজার ২৫০ কোটি।

ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস ইউনিট-টু ৬৪৯ কোটি, কাঁচপুর অ্যাপারেলস ৭৫৯ কোটি, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস ৭৩২ কোটি, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ ১ হাজার ৬৮৬ কোটি, পিয়ারলেস গার্মেন্টস ৯৬০ কোটি, পিংক মেকার অ্যাপারেলস ৯০২ কোটি, প্লাটিনাম গার্মেন্টস ৮৩৭ কোটি, শাইনপুকুর গার্মেন্টস ৩৩৩ কোটি, স্কাই নেট অ্যাপারেলস ৭৩৮ কোটি, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস ৭৬০ কোটি, আরবান ফ্যাশনস ৭০৪ কোটি, হোয়াইট বে অ্যাপারেলস ৮৮৫ কোটি, ইউন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস ৭৭২ কোটি, ইয়োলো অ্যাপারেলস ১ হাজার ৫০ কোটি, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজ ৯৬ কোটি, আর আর ওয়াশিং ৯৭ কোটি, এসকর্প এলপিজি ১১ কোটি ও বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস ৩৬০ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই বেনামি প্রতিষ্ঠান ছিল। পরে এগুলোকে বেক্সিমকো গ্রুপভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানা গেছে, একজন গ্রাহক ব্যাংকের মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ ঋণ নিতে পারেন। এছাড়া ঋণ নিতে বিভিন্ন হারে জামানত রাখতে হয়। এখানে সেসবের কিছুই মানা হয়নি। অর্থাৎ রাজনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে এসব ঋণ নিয়েছেন সালমান এফ রহমান। এ ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করেছেন ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। আবার পরিচালনা পর্ষদ এবং এমডির নির্দেশনা থাকলে অনেক সময় কর্মকর্তাদেরও কিছু করার থাকে না।

বিপুল অঙ্কের এসব ঋণ নেওয়ার সময় জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন আব্দুছ ছালাম আজাদ। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছেন পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি অর্থ সচিব থেকে গভর্নর থাকা পর্যন্ত পুরোটা সময় আব্দুছ ছালাম আজাদকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। যে কারণে আব্দুছ ছালাম আজাদকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন সাবেক গভর্নর ফজলে কবির।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন  বলেন, তিনি তো এখন মানুষ খুনের অভিযোগে জেলে আছেন। আর্থিক অপরাধের জন্যও তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। আবার এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের এমডি, পর্ষদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকও জড়িত। কারণ এত টাকা এক শাখা থেকে কারও অগোচরে বের করেননি। সবাই জানেন।

সুতরাং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সবার শাস্তি হওয়া উচিত। তার আগে টাকা আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। জামানত থেকে থাকলে সেটা বাজেয়াপ্ত করতে হবে। আর শুধু এক শাখা নয়, কোথা থেকে কত টাকা নিয়েছেন, সব বের করতে হবে।

অর্থনীতি

চীনের সঙ্গে মেগা প্রকল্পের চুক্তি, যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়ে ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৫ লাখ টিইইউ থেকে ৪ লাখে পৌঁছাবে।

চীনের সঙ্গে মেগা প্রকল্পের চুক্তি, যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০৬ মে ২০২৫, ১৯:৩২

মোংলা বন্দরের সক্ষমতা ও পরিসর বাড়াতে চীনের সঙ্গে নতুন একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। ‘মোংলা বন্দর সুবিধাদি সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরটি কেবল অবকাঠামোতেই নয়, কৌশলগত বাণিজ্যিক ক্ষমতার ক্ষেত্রেও দক্ষিণাঞ্চলের একটি মূল হাবে পরিণত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমপিএ) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)-এর সঙ্গে সরকার-থেকে-সরকার (জি টু জি) ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর আগে, ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।

প্রকল্পটির মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮ দশমিক ২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৪৭৫ দশমিক ৩২ কোটি টাকা, বাকি অর্থ চীন সরকার দেবে ঋণ হিসেবে—যার পরিমাণ ৩ হাজার ৫৯২ দশমিক ৯০ কোটি টাকা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় দুটি ৩৬৮ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি, আধুনিক কনটেইনার টার্মিনাল, মাল ডেলিভারি ইয়ার্ড, বহুতল গাড়ি সংরক্ষণাগার, সানকেন রেক অপসারণ ব্যবস্থা এবং মূল সড়ক উন্নয়নসহ শিট পাইলিং নির্মাণ হবে। এর পাশাপাশি নির্মিত হবে প্রায় ৮৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার লোডেড কনটেইনার ইয়ার্ড, ৩৪ হাজার ১৭০ বর্গমিটার খালি কনটেইনার ইয়ার্ড এবং ৪ হাজার ২৬০ বর্গমিটার ঝুঁকিপূর্ণ মাল হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড।

প্রকল্পটিতে সংযুক্ত হবে আধুনিক মাল হ্যান্ডলিং সরঞ্জাম ও স্বয়ংক্রিয় অপারেশনাল সিস্টেম, যার মধ্যে থাকবে দেশের প্রথম চালকবিহীন (Unmanned) ক্রেন প্রযুক্তি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে মোংলা পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় বন্দরে পরিণত হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ও রেল সংযোগ চালুর পর থেকে বন্দরে পণ্য ওঠানামার সময় অনেক কমে এসেছে এবং এতে বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের হার বেড়েছে।

প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক জানিয়েছেন, বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়ে ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৫ লাখ টিইইউ থেকে ৪ লাখে পৌঁছাবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. সামিউল হক বলেন, “এটি কেবল অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক কৌশলগত ভরকেন্দ্রকে আরও শক্তিশালী করবে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে, যা দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চলের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।”

মোংলা পোর্ট বার্থ অ্যান্ড শিপ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, উন্নয়ন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে মোংলার গুরুত্ব এবং ব্যবহারযোগ্যতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। খুলনা সিভিক সোসাইটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “এই উদ্যোগ অবশ্যই দেশের জন্য শুভ সংবাদ, তবে স্থানীয় মানুষের সম্পৃক্ততা ও স্বার্থ নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।”

১৯৫০ সালে সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে পশুর নদীর তীরে গড়ে ওঠা মোংলা বন্দর বর্তমানে পাঁচটি জেটি ও ২২টি নোঙর পয়েন্ট নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকে একসঙ্গে ৪৭টি জাহাজ নোঙর করতে পারে। সময়ের সঙ্গে এই বন্দরের গুরুত্ব বাড়ছে, আর এই প্রকল্প সেই বিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতি

২০২৬ সালেই এলডিসি থেকে বের হবে বাংলাদেশ,পেছাবে না সরকার : আনিসুজ্জামান

২০২৬ সালেই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হবে বাংলাদেশ। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটলেও বিভিন্ন দেশ তাদের সুবিধা প্রদান […]

২০২৬ সালেই এলডিসি থেকে বের হবে বাংলাদেশ,পেছাবে না সরকার : আনিসুজ্জামান

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৩৮

২০২৬ সালেই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হবে বাংলাদেশ। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটলেও বিভিন্ন দেশ তাদের সুবিধা প্রদান অব্যাহত রাখবে। এই তালিকা থেকে বাংলাদেশের চেয়ে কম উন্নত বেশ কয়েকটি দেশের উত্তরণ ঘটেছে। তাই বিষয়টি নিয়ে আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত।

তিনি আরও বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণে প্রধান চ্যালেঞ্জ সুশাসনের অভাব। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে কী সুবিধা পাওয়া যাবে সেই প্রশ্ন অবান্তর। এ সময় ভিক্ষার মানসিকতা পরিহার করে সুবিধা পাওয়ার বদলে সুবিধা তৈরির ব্যাপারে জোর দেয়ার কথাও বলেন তিনি।

অর্থনীতি

এবার ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

এই পদক্ষেপকে কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক অসন্তোষ বা অস্বস্তি থেকেই ভারতের এমন সিদ্ধান্ত এসেছে, যার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর পড়বে।

নিউজ ডেস্ক

১৮ মে ২০২৫, ০০:১০

ভারত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাকসহ একাধিক পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ১৭ মে শনিবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে প্রস্তুত পোশাক, সুতা, প্লাস্টিক, জুস ও কনফেকশনারি পণ্য ভারতের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে আর প্রবেশ করতে পারবে না। এসব পণ্য শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর বা মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে রপ্তানি করা যাবে।

নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও কিছু পণ্যে ছাড় রয়েছে। মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণ পাথরের মতো পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে বাধা থাকছে না। পাশাপাশি, ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যে সব বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

ভারতের এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলতি বছরের মার্চে চীনের বেইজিংয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মন্তব্য করেছিলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশই হচ্ছে একমাত্র সমুদ্র প্রবেশপথ ও অভিভাবক। ওই মন্তব্যের পরপরই ভারত বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এবার স্থলবন্দর রপ্তানিতেও কঠোরতা আরোপ করল দিল্লি।

এই পদক্ষেপকে কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক অসন্তোষ বা অস্বস্তি থেকেই ভারতের এমন সিদ্ধান্ত এসেছে, যার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর পড়বে।

ঢাকার রপ্তানিকারকরা বলছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে পরিবহন খরচ বাড়বে, সময়ও অনেক বেশি লাগবে, ফলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিশেষ করে যারা ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর বাজারে কম দামে পণ্য সরবরাহ করতেন, তাদের জন্য এ সিদ্ধান্ত আর্থিক চাপ বাড়াবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এমন পদক্ষেপ কেবল বাণিজ্য নয়, দুই দেশের কূটনৈতিক ভারসাম্যের ওপরও প্রভাব ফেলবে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলে নীতি পুনর্বিবেচনার দাবি জোরালো হচ্ছে। ভারতের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্র-সীমান্তসঙ্গী হিসেবে দেশের কৌশলগত গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হলেও, রাজনৈতিক বাস্তবতায় তা চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।