বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

অর্থনীতি

অর্থ পাচার করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শুকিয়ে ফতুর করে ফেলেছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের হিসাবে, শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনামলে কেবল বাংলাদেশের আর্থিক খাত থেকেই ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। তবে অন্য অর্থনীতিবিদের হিসাবে, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি হতে পারে। […]

নিউজ ডেস্ক

০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৭

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের হিসাবে, শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনামলে কেবল বাংলাদেশের আর্থিক খাত থেকেই ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে।

তবে অন্য অর্থনীতিবিদের হিসাবে, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি হতে পারে।

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচার হওয়া টাকার প্রকৃত পরিমাণ কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। বিভিন্ন ধরনের আর্থিক হিসাব-নিকাশ করে আহসান মনসুর বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে তার সহযোগীরা বাংলাদেশের ব্যাংক খাত থেকে যে পরিমাণ অর্থ লুট করেছে, তা কার্যত পৃথিবীর আর্থিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
মার্কিন এই প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছে গত অক্টোবরে। আর চলতি সপ্তাহে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ক শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে সার্বিকভাবে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।

আহসান মনসুর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছিল, লুটপাট করার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হচ্ছে ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শত শত কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন কোম্পানির নামে ঋণ দিয়েছে, যে কোম্পানিগুলোর অনেকগুলোর আদতে কোনো অস্তিত্বই নেই। এই টাকাও কখনো সম্ভবত ব্যাংকে ফিরে আসবে না; এই অর্থের একটি বড় অংশ দেশ থেকে অবৈধভাবে বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হওয়ার আগে ২৭ বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) কাজ করেছেন আহসান মনসুর। তিনি বলেন, ব্যাংকের পুরো পরিচালনা পর্ষদ হাইজ্যাক করা হয়েছিল। তার ভাষ্য, বিশ্বের অন্য কোনো দেশে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এভাবে গুন্ডা-মাস্তানদের সহযোগিতায় পুরো ব্যাংক খাতে এমন পদ্ধতিগতভাবে ডাকাতি করেছে, এমন ঘটনা তিনি আর কোথাও দেখেননি।

অর্থনীতি প্রসঙ্গে আহসান মনসুর বলেন, আগামী বছর অর্থনীতির আকাশে আরও কালো মেঘের ঘনঘটা থাকবে। এরপর অর্থনীতির আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে।

শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে গেছেন। তার ভাগ্যে কী আছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, তাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

এর মধ্যে শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্বাহী পরিচালক এ কে এম এহসান। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি।

সম্প্রতি আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ‘উইচ হান্ট’ করা হচ্ছে, তিনি এর বাইরে নন।

নিউইয়র্ক টাইমস শেখ হাসিনা ও সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় খালি পড়ে আছে। এরপর তারা শেখ হাসিনার মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হয়নি।

ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল মান্নানের পদত্যাগের ঘটনা সবিস্তারে তুলে ধরেছে নিউইয়র্ক টাইমস। সংবাদে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি আর দশটা সাধারণ দিনের মতো আব্দুল মান্নান কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। পথিমধ্যে তিনি একটি ফোন কল পান। কলটি করেছিলেন সামরিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান। তাকে বলা হয়, গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি যেন সংস্থাটির সদর দপ্তরে চলে আসেন।

গত অক্টোবর মাসে আব্দুল মান্নান নিউইয়র্ক টাইমসকে সেই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। কার্যালয়ে যাওয়ার পর সামরিক গোয়েন্দারা আব্দুল মান্নানের ফোন, ঘড়ি ও ওয়ালেট রেখে দেন। এরপর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আব্দুল মান্নানের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের বিবরণ দেন; বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে তিনি যে গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের কাছে নিয়ে গেছেন, সে জন্য তার প্রশংসা করেন।

আব্দুল মান্নান ও আহসান মনসুর একই সুরে বলেন, ওই ঘটনার পর এস আলম গোষ্ঠী ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ কবজা করে। এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল আলম ট্রেডার হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বিশেষ করে শেখ হাসিনার আমলে জ্বালানি, আবাসন খাতসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন।

 

অর্থনীতি

চীনের সঙ্গে মেগা প্রকল্পের চুক্তি, যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়ে ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৫ লাখ টিইইউ থেকে ৪ লাখে পৌঁছাবে।

চীনের সঙ্গে মেগা প্রকল্পের চুক্তি, যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০৬ মে ২০২৫, ১৯:৩২

মোংলা বন্দরের সক্ষমতা ও পরিসর বাড়াতে চীনের সঙ্গে নতুন একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। ‘মোংলা বন্দর সুবিধাদি সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরটি কেবল অবকাঠামোতেই নয়, কৌশলগত বাণিজ্যিক ক্ষমতার ক্ষেত্রেও দক্ষিণাঞ্চলের একটি মূল হাবে পরিণত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (এমপিএ) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)-এর সঙ্গে সরকার-থেকে-সরকার (জি টু জি) ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর আগে, ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়।

প্রকল্পটির মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮ দশমিক ২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৪৭৫ দশমিক ৩২ কোটি টাকা, বাকি অর্থ চীন সরকার দেবে ঋণ হিসেবে—যার পরিমাণ ৩ হাজার ৫৯২ দশমিক ৯০ কোটি টাকা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় দুটি ৩৬৮ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি, আধুনিক কনটেইনার টার্মিনাল, মাল ডেলিভারি ইয়ার্ড, বহুতল গাড়ি সংরক্ষণাগার, সানকেন রেক অপসারণ ব্যবস্থা এবং মূল সড়ক উন্নয়নসহ শিট পাইলিং নির্মাণ হবে। এর পাশাপাশি নির্মিত হবে প্রায় ৮৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার লোডেড কনটেইনার ইয়ার্ড, ৩৪ হাজার ১৭০ বর্গমিটার খালি কনটেইনার ইয়ার্ড এবং ৪ হাজার ২৬০ বর্গমিটার ঝুঁকিপূর্ণ মাল হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড।

প্রকল্পটিতে সংযুক্ত হবে আধুনিক মাল হ্যান্ডলিং সরঞ্জাম ও স্বয়ংক্রিয় অপারেশনাল সিস্টেম, যার মধ্যে থাকবে দেশের প্রথম চালকবিহীন (Unmanned) ক্রেন প্রযুক্তি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে মোংলা পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় বন্দরে পরিণত হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ও রেল সংযোগ চালুর পর থেকে বন্দরে পণ্য ওঠানামার সময় অনেক কমে এসেছে এবং এতে বাণিজ্যিক জাহাজ আগমনের হার বেড়েছে।

প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক জানিয়েছেন, বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়ে ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৫ লাখ টিইইউ থেকে ৪ লাখে পৌঁছাবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. সামিউল হক বলেন, “এটি কেবল অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক কৌশলগত ভরকেন্দ্রকে আরও শক্তিশালী করবে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে, যা দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চলের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।”

মোংলা পোর্ট বার্থ অ্যান্ড শিপ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, উন্নয়ন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে মোংলার গুরুত্ব এবং ব্যবহারযোগ্যতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। খুলনা সিভিক সোসাইটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “এই উদ্যোগ অবশ্যই দেশের জন্য শুভ সংবাদ, তবে স্থানীয় মানুষের সম্পৃক্ততা ও স্বার্থ নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।”

১৯৫০ সালে সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে পশুর নদীর তীরে গড়ে ওঠা মোংলা বন্দর বর্তমানে পাঁচটি জেটি ও ২২টি নোঙর পয়েন্ট নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকে একসঙ্গে ৪৭টি জাহাজ নোঙর করতে পারে। সময়ের সঙ্গে এই বন্দরের গুরুত্ব বাড়ছে, আর এই প্রকল্প সেই বিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতি

২০২৬ সালেই এলডিসি থেকে বের হবে বাংলাদেশ,পেছাবে না সরকার : আনিসুজ্জামান

২০২৬ সালেই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হবে বাংলাদেশ। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটলেও বিভিন্ন দেশ তাদের সুবিধা প্রদান […]

২০২৬ সালেই এলডিসি থেকে বের হবে বাংলাদেশ,পেছাবে না সরকার : আনিসুজ্জামান

ছবি : সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৩৮

২০২৬ সালেই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হবে বাংলাদেশ। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না— এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটলেও বিভিন্ন দেশ তাদের সুবিধা প্রদান অব্যাহত রাখবে। এই তালিকা থেকে বাংলাদেশের চেয়ে কম উন্নত বেশ কয়েকটি দেশের উত্তরণ ঘটেছে। তাই বিষয়টি নিয়ে আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত।

তিনি আরও বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণে প্রধান চ্যালেঞ্জ সুশাসনের অভাব। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে কী সুবিধা পাওয়া যাবে সেই প্রশ্ন অবান্তর। এ সময় ভিক্ষার মানসিকতা পরিহার করে সুবিধা পাওয়ার বদলে সুবিধা তৈরির ব্যাপারে জোর দেয়ার কথাও বলেন তিনি।

অর্থনীতি

এবার ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

এই পদক্ষেপকে কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক অসন্তোষ বা অস্বস্তি থেকেই ভারতের এমন সিদ্ধান্ত এসেছে, যার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর পড়বে।

নিউজ ডেস্ক

১৮ মে ২০২৫, ০০:১০

ভারত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাকসহ একাধিক পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ১৭ মে শনিবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে প্রস্তুত পোশাক, সুতা, প্লাস্টিক, জুস ও কনফেকশনারি পণ্য ভারতের কোনো স্থলবন্দর দিয়ে আর প্রবেশ করতে পারবে না। এসব পণ্য শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর বা মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে রপ্তানি করা যাবে।

নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলেও কিছু পণ্যে ছাড় রয়েছে। মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণ পাথরের মতো পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে বাধা থাকছে না। পাশাপাশি, ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যে সব বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

ভারতের এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলতি বছরের মার্চে চীনের বেইজিংয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মন্তব্য করেছিলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশই হচ্ছে একমাত্র সমুদ্র প্রবেশপথ ও অভিভাবক। ওই মন্তব্যের পরপরই ভারত বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এবার স্থলবন্দর রপ্তানিতেও কঠোরতা আরোপ করল দিল্লি।

এই পদক্ষেপকে কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক অসন্তোষ বা অস্বস্তি থেকেই ভারতের এমন সিদ্ধান্ত এসেছে, যার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর পড়বে।

ঢাকার রপ্তানিকারকরা বলছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে পরিবহন খরচ বাড়বে, সময়ও অনেক বেশি লাগবে, ফলে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিশেষ করে যারা ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর বাজারে কম দামে পণ্য সরবরাহ করতেন, তাদের জন্য এ সিদ্ধান্ত আর্থিক চাপ বাড়াবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এমন পদক্ষেপ কেবল বাণিজ্য নয়, দুই দেশের কূটনৈতিক ভারসাম্যের ওপরও প্রভাব ফেলবে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলে নীতি পুনর্বিবেচনার দাবি জোরালো হচ্ছে। ভারতের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্র-সীমান্তসঙ্গী হিসেবে দেশের কৌশলগত গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হলেও, রাজনৈতিক বাস্তবতায় তা চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।