ফুটবল বিশ্বকাপের ২৫তম আসর আয়োজনের গৌরব অর্জন করেছে সৌদি আরব, যা ২০৩৪ সালে অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি ফিফা আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়। বিশাল এই আয়োজনের জন্য সৌদি আরবের ৫টি শহরের ১৫টি স্টেডিয়ামকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আসন্ন এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ৪৮টি দল।
মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমপ্রধান দেশ হওয়ায় সৌদি আরবে ইসলামি আইন কঠোরভাবে পালন করা হয়। এর আগে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ কাতারে। তবে সেখানে আংশিকভাবে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। বিশ্বকাপ উপলক্ষে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে বিদেশি পর্যটকদের জন্য মদ সরবরাহের সুযোগ রাখা হয়েছিল। কিন্তু সৌদি আরবে এরকম কিছু ঘটছে না বলে ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সৌদি আরবে ১৯৫২ সাল থেকে মদ নিষিদ্ধ, এবং এই নীতিতে বিদেশিদের জন্যও কোনো শিথিলতা নেই। দেশটিতে মদপানের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি বিদ্যমান। মদপান করলে আইন অনুযায়ী কয়েকশ বেত্রাঘাত, কারাদণ্ড, আর্থিক জরিমানা, কিংবা দেশ থেকে বহিষ্কারের মতো শাস্তি হতে পারে।
যদিও বর্তমানে মদ পান নিয়ে কিছুটা শিথিলতার পথে হাঁটছে তেল সমৃদ্ধ দেশটি। পর্যটন ও অন্যান্য ব্যবসা খাতকে সমৃদ্ধ করতে মদের দোকান খোলার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। ইসলামে মদসহ যে কোনো ধরনের নেশাদ্রব্য সম্পূর্ণভাবে হারাম বা নিষিদ্ধ। তবে নতুন দোকানটি রিয়াদের কূটনৈতিক পাড়ায়, যেখানে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস রয়েছে। ওই এলাকাটিতেই দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা থাকেন। তবে দোকানটি যেতে পারবেন শুধু অমুসলিমরাই।
কিন্তু আসন্ন ২০৩৪ বিশ্বকাপ উপলক্ষে আগত সমর্থকদের জন্য প্রকাশ্য মদ্যপানের তেমন ব্যবস্থা থাকবে না বলেই খবর। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দশ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য সৌদি বিশ্বকাপে স্টেডিয়ামে বসে মদ্যপান করতে পারবেন না।
যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। তবে সংস্থাটির দায়িত্বশীল সূত্র গার্ডিয়ানকে বলেছে, ম্যাচগুলোতে মদ বিক্রি হওয়া নিয়ে কোনো প্রশ্নের সুযোগ নেই। অন্যান্য অনেক মুসলিম দেশের বিপরীতে সৌদি আরবে বিলাসবহুল হোটেলেও অ্যালকোহল বিক্রি নিষিদ্ধ।
এক সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, ‘সৌদি আরব আবগারি আইন শিথিল করবে না। ফিফাও তাদের কোনও রকম আবেদন করবে না বলেই জানা গিয়েছে। ম্যাচের মাঝে বিয়ার বিক্রি করা হবে না বলেই জানা গিয়েছে।’ অবশ্য সৌদি বিশ্বকাপের বাকি এখনো ১০ বছর। তখন নিয়ম বদলাবে কি না তা বলা মুশকিল। কাতারে যেমন বিশ্বকাপ শুরুর দু’দিন আগে আবগারি আইন শিথিল করা হয়েছিল।