শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমিন: আমি আছি থাকব’ শিরোনামে অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
পরে তাৎক্ষণিক তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়। শনিবার সকালে আবাও অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ।
সেখানে তাকে ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাবিনা ইয়াসমিন একজন বাংলাদেশি নেপথ্য সংগীতশিল্পী। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসংগীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে নিজেকে দেশের অন্যতম সেরা সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। শিল্পকলার সঙ্গীত শাখায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
এদিকে আইসিইউতে লালন-সম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন ,শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তার স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম।
জানা যায়, লোকসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের ফুসফুসে পানি জমেছে। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।
তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিলে তাকে শনিবার ভোরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
শিল্পীর ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। অন্যদিকে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত কিছু সমস্যা রয়েছে তার।
বর্তমানে তিনি একজন বক্ষব্যাধি, কিডনি এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তার অবস্থা কিছুটা জটিল।
চিকিৎসকরা তাকে ডায়ালাইসিসের পরামর্শ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ফরিদা পারভীনে দায়িত্বরত চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ফরিদা পারভীনকে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
তার ফুসফুস আক্রান্ত, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং থাইরয়েডের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত কিছু সমস্যা আছে।’
উল্লেখ্য, ফরিদা পারভীন ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত পরিবেশন শুরু করেন।
১৯৭৩ সালের দিকে দেশের গান গেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান।
২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। ১৯৯৩ সালে সিনেমার গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এ শিল্পী।