রোকুনুজ্জামান, জবি প্রতিনিধি
পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী জুবায়েদ আহমেদের হত্যাকাণ্ডে এক ছাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতের নাম বর্ষা আক্তার, যিনি নিহত জুবায়েদের ছাত্রী ছিলেন। জানা গেছে, জুবায়েদ নিয়মিত বর্ষার বাসায় গিয়ে তাকে প্রাইভেট পড়াতেন।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বংশালের নূর বক্স রোডের রৌশান ভিলা থেকে বর্ষাকে আটক করে পুলিশ। একই সঙ্গে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদেরও নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এর আগে সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলার একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় জুবায়েদ আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত জুবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করছিলেন।
ঘটনার পর এলাকাটি ঘিরে রাখে পুলিশ ও স্থানীয়রা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সেখানে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শী জবি শিক্ষার্থী রেজওয়ান ইসলাম জানান, “জুবায়েদ যে ভবনে টিউশন করাতেন, সেই ভবনের তৃতীয় তলার সিঁড়িতেই তার মরদেহ পড়ে ছিল, আর সিঁড়িজুড়ে রক্তের দাগ ছড়িয়ে ছিল।”
জবিয়ান পেজ সূত্রে জানা যায়, ওই বাসার পঞ্চম তলায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বর্ষাকে ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি ও হায়ার ম্যাথ পড়াতেন জুবায়েদ। ঘটনার কিছুক্ষণ আগে বর্ষা তাকে ফোন করে জানতে চায়, তিনি পড়াতে আসবেন কিনা। ফোনালাপে জুবায়েদ জানান, তিনি ইতোমধ্যে নূর বক্স লেনে প্রবেশ করেছেন। এরপরই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
জবির ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ কামরুল হাসান বলেন, “সিঁড়িতে রক্তের দাগ দেখে মনে হচ্ছে, জুবায়েদ প্রাণ বাঁচাতে নিচ তলা থেকে দৌড়ে তিনতলা পর্যন্ত গিয়েছিলেন।
আশ্চর্যের বিষয়, এমন একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটলেও ভবনের কেউ কিছু দেখেনি বা বলেনি। পাশের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে পেছন দিক থেকে দুজনকে দৌঁড়ে আসতে দেখা গেছে, তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়।”
বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, “পুলিশ ইতোমধ্যে দুজনকে শনাক্ত করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের ছাত্রী বর্ষা আক্তার ও তার এক বয়ফ্রেন্ড এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন এই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত চলছে।”