হাবিবুর রহমান সাগর , জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ কমাতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে ইলেকট্রনিক কার্ট গাড়ি।
ক্যাম্পাসে অভ্যন্তরীণ যানবাহন নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ যেন কমছেই না। বিস্তৃত এই ক্যাম্পাসে পায়ে হেঁটে সবখানে যাওয়া যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় চড়াও শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হওয়ার কারণে তাদের যাতায়াতের বিকল্প হিসেবে পায়ে চালিত রিকশা ও শাটল বাস চালু করে। কিন্তু এতে করে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটেছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া, ক্যাম্পাসের উঁচু-নিচু ভূমি, প্রভৃতি কারণে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
এছাড়া শাটল বাস চালু করা হলেও এর ফলপ্রসূ ব্যবহার হচ্ছে না বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাটল বাসে প্রতিদিন চল্লিশ হাজার টাকা ব্যয় হলেও তার সুফল পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অটোরিকশা চলাচল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। এখন রমজান মাস, প্রচণ্ড গরম, রোজা রেখে দূরত্ব অতিক্রম করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের চলাচলের সুবিধার জন্য ক্যাম্পাসে অটোরিকশা পুনরায় চালুর প্রয়োজন। আমরা চাই, প্রশাসন ক্যাম্পাসে রিকশা চলাচলের অনুমতি দিক।
এর আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের আফসানা করিম রাচির মৃত্যু হয় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দিলেও এর বিকল্প হিসেবে স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ভোগান্তি কমাতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে ইলেকট্রনিক কার্ট গাড়ি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মশিউর রহমান।
তিনি জানান, মার্চ মাসেই পরীক্ষামূলকভাবে কার্টভ্যান চালু করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসের ভূমি যেহেতু উঁচু-নিচু তাই আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি কার্গো চালু করব। কার্গো আট থেকে ১০ সিটের হয়ে থাকে ও এটা পরিবেশবান্ধব।
আমাদের এখানে ইতোমধ্যে দু’টি ইলেকট্রনিক গাড়ি চলে আসছে। এগুলো আমরা এক্সপেরিমেন্ট করছি। আশা করছি, যাতায়াতের একটি স্থায়ী সমাধান হবে।’
প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে স্থায়ী শাটল সার্ভিস চালু করার জন্য গঠিত কমিটি এখন পর্যন্ত কয়েকটি মিটিং করেছে এবং বিভিন্ন কোম্পানির সাথে আলোচনা করেছে।
ইতোমধ্যে আমরা স্থানীয় একটা কোম্পানির দু’টি কার্ট গাড়ি পরীক্ষামূলকভাবে চালাচ্ছি। যদিও অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে আমরা আশা করছি, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে আরো তিনটি কার্ট গাড়ি যুক্ত হবে।
এবং আগামী দু’তিন মাসের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে আমরা এই সার্ভিস চালু করতে পারব বলে আশা করছি।