ইবি প্রতিনিধি:
বিভাগ সংস্কারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন অনুষদভুক্ত আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১ মার্চ) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় তারা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আইন অনুষদের অন্য বিভাগের ন্যায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়াসহ বিভাগ সংস্কারে বিভিন্ন দাবি জানান।
এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘আইন অনুষদের পরীক্ষা ধর্মতত্ত্বে কেন’, ‘অনতিবিলম্বে বিভাগের নাম সংস্কার চাই’, ‘আমরা কেন অস্তিত্ব সংকটে’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা বিভাগের সেশনজট দূর করা, বিভাগের নামে আইন শব্দটি যুক্ত করা, ইউজিসি কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী বিভাগের কারিকুলাম সংস্কার করা এবং আইন অনুষদের সঙ্গেই তাদের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়াসহ বিভাগ সংস্কারের বিভিন্ন দাবি তোলেন।
জানা যায়, গত বুধবার বিভাগে একাডেমিক কমিটিতে আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ‘বি’ ইউনিটের পরিবর্তে ‘ডি’ ইউনিট তথা ধর্মতত্ত্ব অনুষদের সঙ্গে নেয়া হবে বলে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে। পাশাপাশি বিভাগের নাম পরিবর্তন ও সেশনজট নিয়ে দাবি তুলেন তারা।
বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নাজিমুদ্দিন বলেন, আমরা ধর্মতত্ত্ব অনুষদের অধীনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে আইন এবং ফিকহ্ ২দিক রক্ষা হবে। ডি ইউনিটভুক্ত হওয়া মানে আইন অনুষদ ছেড়ে দিয়ে ঐ অনুষদে যাওয়া নয়। ডি ইউনিটে কলা অনুষদও আছে। এটা ২২ বছরের প্রতিষ্ঠিত একটা বিশেষায়িত বিভাগ, এখানে শঙ্কার কোনো কারণ নেই।
এটা যুক্তিসঙ্গত কিনা প্রশাসন বিবেচনা করে দেখবেন।
বিভাগের নাম পরিবর্তনে বিষয়ে তিনি জানান, বিভাগের নাম আমরাও পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনকে অবহিত করেছি। নাম পরিবর্তনের বিষয়ে পুরো বিভাগ একমত। কোনো কিছু হতে সময় লাগে, নতুন প্রশাসন আসছেন।
এ বিষয়ে উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা শুনেছি। বিভাগে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিলে সেটা বাস্তবায়ন করার এখতিয়ার প্রশাসনের রয়েছে। শিক্ষার্থীদেরকে আগামীকাল লিখিত দরখাস্ত দিতে বলা হয়েছে। দুই পক্ষের কথা শুনে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিবে।
উল্লেখ্য, ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদভুক্ত আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বিভাগটিতে শতভাগ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। এছাড়াও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত এই বিভাগে ভর্তি হতে ভর্তি পরীক্ষায় বাধ্যতামূলক ফিকহী বিষয়ে উত্তর করতে হতো। কিন্তু ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি নীতিতে পরিবর্তন আনে প্রশাসন। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ বিভাগটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে অন্যখাতে প্রবাহিত করতে তৎকালীন আওয়ামী প্রশাসন ভর্তি নীতি পরিবর্তন করে। যা পরবর্তীতে বিভাগটির ভাবমূর্তি ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে কোনঠাসা করে দেয়।