শেকৃবি প্রতিনিধি:
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রকাশনা উৎসবে প্রশাসনের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন প্রথম দিন শেষে স্টলগুলো গুটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়, যা আয়োজকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি না থাকলেও প্রশাসনকে জানিয়ে, ছাত্র শিবির তাদের পূর্বনির্ধারিত ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশনা উৎসব শুরু করে। প্রথম দিন অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে চললেও, ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক, প্রক্টর এবং সহকারী প্রক্টর অনুষ্ঠানস্থলে এসে স্টলগুলো তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যথায়, প্রশাসন নিজ উদ্যোগে স্টল ভেঙে ফেলার হুঁশিয়ারি দেয়।
উল্লেখ্য, এর পূর্বে ক্যাম্পাসে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এবং আইনে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও ছাত্রদলের একাধিক প্রোগ্রাম আয়োজিত হলেও তাতে প্রশাসনের কোন প্রকার হস্তক্ষেপ নজরে আসে নি।
এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আয়োজকদের দাবি, প্রকাশনা উৎসবের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সৃজনশীল চিন্তার বিকাশ ঘটানো। এটি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও শিক্ষামূলক উদ্যোগ ছিল, যা ক্যাম্পাসের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের কোনো কারণ ছিল না।
শিবিরের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, এ ধরনের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের বিকাশ ঘটে এবং তারা নতুন জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ অযৌক্তিক ও দুঃখজনক।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি, তবে প্রথম দিনে তারা কোনো বাধা দেয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় দ্বিতীয় দিনের আগে স্টল তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আশাবুল হক বলেন, “বাধা দেওয়া হয়নি, বরং আমরা আয়োজকদের অনুরোধ করেছি যেন তারা অনুষ্ঠানটি সংক্ষিপ্ত করে এবং আজকের মধ্যেই শেষ করে। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও ২১ ফেব্রুয়ারির প্রস্তুতির বিষয় বিবেচনায় নিয়েই প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা না শুনলে পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।”
এ নিয়ে শেকৃবি ছাত্র শিবিরের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য একটি প্রকাশনা উৎসব করেছি। যা আমরা দীর্ঘদিন যাবত পরিকল্পনা করেছি এবং প্রশাসনের মৌন সম্মতিতে করেছি। ২১ ফেব্রুয়ারি আয়োজন বিবেচনায় রেখে আমরা অনুষ্ঠানটি শহিদ মিনারের পাশে থেকে সরে টিএসসির সামনে আনি। পাশাপাশি রাত ৮টার মধ্যে সব কার্যক্রম শেষসহ স্থানটি আগের মতো পরিচ্ছন্ন করে রাখারও কথা দিয়েছি।