আশরাফুল ইসলাম,শেকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি (বাকআশ) ২০২৫-২৬ সেশনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) গ্রাজুয়েটদের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। কমিটিতে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র দুইজন স্থান পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদ জানান এবং কমিটি পুনর্গঠনের দাবি তোলেন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বাকআশের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় মো. আহসানুজ্জামান লিন্টুকে সভাপতি ও গোলাম হাফিজ কেনেডিকে সেক্রেটারি করে ৬৩ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সারা দেশের কৃষি অর্থনীতি অনুষদের গ্রাজুয়েটদের অন্তর্ভুক্ত করা হলেও শেকৃবি থেকে মাত্র দুইজন স্থান পান। অন্যদিকে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয়জন এবং সভাপতি ও সেক্রেটারি পদে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গ্রাজুয়েটদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই বৈষম্যমূলক প্রতিনিধিত্বের বিরুদ্ধে আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি শেকৃবির কৃষি অর্থনীতি অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন এবং কমিটি বাতিলের দাবি জানান। তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে কৃষি অর্থনীতির বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মকাণ্ডে শেকৃবির শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসলেও এবারের কমিটিতে তাদের প্রতি অবহেলা করা হয়েছে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি অনুষদ দেশের কৃষি ও অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। পূর্ববর্তী আন্দোলন ও গবেষণামূলক কাজে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলেও এবারের কমিটিতে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি।
শেকৃবি কৃষি অর্থনীতি ছাত্র সমিতির সভাপতি হামিদুর রহমান হিমেল বলেন,”বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির নতুন কমিটিতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের সংখ্যা অত্যন্ত কম রাখা হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়। আমরা এই কমিটিকে স্বাগত জানাতে পারছি না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা এই কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা ছিল, কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। যদি কমিটির সঠিক পর্যালোচনা না করা হয়, তাহলে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের অসহযোগিতা করব।”
শেকৃবি কৃষি অর্থনীতি ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম নিলয় বলেন, “এই কমিটি গঠনের আগে অন্তত ২০টি বৈঠক হয়েছে, কিন্তু শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোনো তথ্য জানানো হয়নি। এটি পুরোপুরি অস্বচ্ছ ও একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত। আমাদের যদি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হতো, তবে অবশ্যই আমরা আমাদের মতামত তুলে ধরতে পারতাম। কিন্তু আমাদের সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই আন্দোলন শুধু শেকৃবির নয়, বরং সারা দেশের কৃষি অর্থনীতি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতিফলন।”
শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে কমিটি বাতিল করে পুনরায় সুষ্ঠু ও ন্যায্য উপায়ে কমিটি গঠনের আহ্বান জানান। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি তাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।