বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

শিক্ষাঙ্গন

তিতুমীর কলেজের আন্দোলনের পেছনেও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে ‘তিতুমীর ঐক্যে’র ব্যানারে ২৯ জানুয়ারি দুপুর থেকে অনশন শুরু করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে কয়েকজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পদধারী নেতাও রয়েছেন। তারাই মূলত আন্দোলনে নেতৃত্ব ও ইন্ধন দিচ্ছে। তাদেরকে পিছন থেকে শেল্টার ও ইন্ধন দিচ্ছে লীগ নেতারা।নগরবাসীকে অতিষ্ঠ করে তোলা তিতুমীরের এই আন্দোলনকে অনেকেই অযৌক্তিক হিসেবে দাবি করছেন। দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী […]

নিউজ ডেস্ক

০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:২৮

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে ‘তিতুমীর ঐক্যে’র ব্যানারে ২৯ জানুয়ারি দুপুর থেকে অনশন শুরু করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে কয়েকজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পদধারী নেতাও রয়েছেন।

তারাই মূলত আন্দোলনে নেতৃত্ব ও ইন্ধন দিচ্ছে। তাদেরকে পিছন থেকে শেল্টার ও ইন্ধন দিচ্ছে লীগ নেতারা।নগরবাসীকে অতিষ্ঠ করে তোলা তিতুমীরের এই আন্দোলনকে অনেকেই অযৌক্তিক হিসেবে দাবি করছেন।

দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী অন্যায্য এই আন্দোলনের পেছনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ইন্ধন থাকার বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল। কিন্তু এক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রহস্যজনক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

তিতুমীর শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক আন্দোলনকে পরিকল্পিতভাবে ঢাকাকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন সচেতন মহল। তারা গোয়েন্দা ব্যর্থতার কড়া সমালোচনা করে বলছেন, যে গোয়েন্দা সংস্থা ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিত তারা কেন এখন আগাম তথ্য উদঘাটন করতে পারছেন না। তাদের এই রহস্যজনক ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে নানা সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সর্মথকেরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে আন্দোলনের পন্থা নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হচ্ছে। একটি পক্ষ আন্দোলন করতে চাইলেও রাস্তা বন্ধের পক্ষে নেই। আবার অন্য পক্ষ রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করতে ইচ্ছুক।

সংশ্লিষ্ট তথ্যে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকে আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের রিপন, জুয়েল, সাইফুল, ইব্রাহীম, সানিসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী শেলটার দিচ্ছেন।

পাশাপাশি তারা এ কাজে ছাত্রলীগ নেতা মির্জা রাকিব, সুজন, জাহিদ, মো. বেলাল আহমেদ তালুকদার, মাহফুজ, সাবের হোসেন, সোহান, রাসেলসহ বেশ কয়েকজনকে সহযোগিতা করছেন।
(সূত্র: রূপালী বাংলাদেশ)

আন্দোলনে সামনের দিকে সক্রিয় একজনের নাম রাকিব মিয়া। সে সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক। আরেকজনের নাম তাহসান হাসান সোহান। সে ছাত্রলীগের সরকারি তিতুমীর কলেজের সহ-সম্পাদক। আর একজন ছাত্রলীগের কর্মী রয়েছে যার নাম আলি আহম্মেদ।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলন মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।ফলে সাধারণ মানুষ ও দেশের সচেতন মহল মনে করছে- তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কি সত্যিই বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলন করছে নাকি এর নেপথ্যে অন্য কিছু রয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন হয়তো অন্তর্বর্তী সরকারের গলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। তাই এ বিষয়ে সরকারের অতিরিক্ত সতর্ক থাকা উচিত বলে জানান তারা।

এরআগে গেল নভেম্বরে তিতুমীরের সহিংস আন্দোলনে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা গেছে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীকে।

বিষয়টি নিয়ে তখনও সামাজিক মাধ্যমে তৈরি হয়েছে সমালোচনা। কর্মসূচিতে অংশ নেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বনানী থানার সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. বেলাল আহমেদ তালুকদার।

বেলাল আহমেদের ফেসবুকে প্রোফাইলে দেখা যায় আন্দোলনের পক্ষে বিভিন্ন পোস্ট। এছাড়াও আজকের অবরোধে তার অ্যাকাউন্ট থেকে একাধিক লাইভ করতে দেখা যায়। (সূত্র: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস)

এদিকে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দেয়ার দাবিতে যে আন্দোলন, তাতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে এবং সরকারেরও নাভিশ্বাস অবস্থা।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ সুষ্ঠুভাবে উদযাযাপনের লক্ষ্যে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা তো লোকজনকে অতিষ্ঠ করে ফেলছে। দিনের পর দিন কিন্তু তাদের এ দাবি-দাওয়া বেড়েই চলছে। এটার পেছনে কারা জড়িত সেটাও কিন্তু আপনারা জানেন, এটা কিন্তু আপনারা (সাংবাদিক) প্রকাশ করেন না।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।

যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়।

তবে এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবারও ষষ্ঠ দিনের মতো অনশন করছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

একইসঙ্গে মহাখালী এলাকায় শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রেললাইন অবরোধ করায় সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবিও মোতায়েন করা হয়েছে।

অন্যান্য

ডিসেম্বরে চাকরিজীবীরা পাচ্ছেন টানা ৪ দিন ছুটি

ডিসেম্বর মাসে টানা ছুটি পেতে যাচ্ছেন সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা। সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে সরকারি ছুটি মিলিয়ে টানা ছুটি পেতে পারেন তারা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সাধারণ ছুটির মধ্যে রয়েছে বিজয় দিবস ও বড়দিনের ছুটি। ১৬ ডিসেম্বর সোমবার। রবিবার একদিন ছুটি ম্যানেজ করতে পারলেই শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে টানা ৪ দিনের ছুটি নিতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। এছাড়া ২৫ ডিসেম্বর […]

নিউজ ডেস্ক

৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৪৮

ডিসেম্বর মাসে টানা ছুটি পেতে যাচ্ছেন সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা। সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে সরকারি ছুটি মিলিয়ে টানা ছুটি পেতে পারেন তারা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সাধারণ ছুটির মধ্যে রয়েছে বিজয় দিবস ও বড়দিনের ছুটি। ১৬ ডিসেম্বর সোমবার।

রবিবার একদিন ছুটি ম্যানেজ করতে পারলেই শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে টানা ৪ দিনের ছুটি নিতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। এছাড়া ২৫ ডিসেম্বর বুধবার। তাই বৃহস্পতিবার একদিন ছুটি ম্যানেজ করতে পারলেই টানা চারদিন ছুটি পেতে পারবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের সব সরকারি ও আধা-সরকারি অফিস এবং সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় এ ‍দুদিন ছুটি পালন করা হবে।

তবে যেসব অফিসের সময়সূচি ও ছুটি তাদের নিজস্ব আইন-কানুন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে বা যেসব অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের চাকরি সরকার থেকে অত্যাবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নিজস্ব আইন-কানুন অনুযায়ী জনস্বার্থ বিবেচনা করে এ ছুটি ষোষণা করবে।

এদিকে ২৪ ডিসেম্বর ও ২৬ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মোৎসব (বড়দিনের আগে ও পরের দিন) হচ্ছে খ্রিষ্টান পর্বের ঐচ্ছিক ছুটি। ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, একজন কর্মচারীকে তার নিজ ধর্ম অনুযায়ী বছরে অনধিক মোট তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার অনুমতি দেয়া যেতে পারে।

প্রত্যেক কর্মচারীকে বছরের শুরুতে নিজ ধর্ম অনুযায়ী নির্ধারিত তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন নিতে হয়।কর্মব্যস্ত জীবনে সাপ্তাহিক ছুটিতে অনেকেরই ব্যক্তিগত নানান জরুরি কাজ থাকে।

তবে সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে সরকারি ছুটি পেলে কোথাও টুরে যাওয়া যায় বা কোনো পরিকল্পনা করা যায়। তাই এমন সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন বহু মানুষ।

 

 

 

শিক্ষাঙ্গন

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি সমাজবিজ্ঞান ক্লাবের উদ্যোগে রিকশাচালকদের ট্রাফিক নিয়ম সচেতনতা বৃদ্ধি

মোঃ ফকরুল আকন (ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি প্রতিনিধি): ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ক্লাব আফতাবনগর ও রামপুরা ব্রিজ এলাকায় রিকশাচালকদের মধ্যে ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। ক্লাবের সদস্যরা রিকশাচালকদের সঠিক ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার গুরুত্ব বোঝানোর পাশাপাশি, যানজট কমাতে ও দুর্ঘটনা এড়াতে কীভাবে আরও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে চলাচল করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। […]

নিউজ ডেস্ক

১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০০:২৫

মোঃ ফকরুল আকন (ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি প্রতিনিধি):

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ক্লাব আফতাবনগর ও রামপুরা ব্রিজ এলাকায় রিকশাচালকদের মধ্যে ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

ক্লাবের সদস্যরা রিকশাচালকদের সঠিক ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার গুরুত্ব বোঝানোর পাশাপাশি, যানজট কমাতে ও দুর্ঘটনা এড়াতে কীভাবে আরও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে চলাচল করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

এছাড়া, ক্লাবের পক্ষ থেকে রিকশাচালকদের জন্য সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে ক্লাব।

শিক্ষাঙ্গন

ভাষার জন্য রক্ত, বাঙালির মহত্ত্বকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

ভাষা একটি জাতির পরিচয়ের মূল ভিত্তি, আর মাতৃভাষা হলো হৃদয়ের গভীর অনুভূতির প্রকাশ। বাঙালি জাতি তার ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, আত্মত্যাগ করেছে, যা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বাংলার মাটি, আর সেই আত্মত্যাগের ফলেই আমরা আজ স্বাধীনভাবে মাতৃভাষায় কথা বলতে পারি।   জন্মের পর থেকেই আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলি, […]

প্রতিনিধি ডেস্ক

০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৬:২৫

ভাষা একটি জাতির পরিচয়ের মূল ভিত্তি, আর মাতৃভাষা হলো হৃদয়ের গভীর অনুভূতির প্রকাশ। বাঙালি জাতি তার ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, আত্মত্যাগ করেছে, যা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বাংলার মাটি, আর সেই আত্মত্যাগের ফলেই আমরা আজ স্বাধীনভাবে মাতৃভাষায় কথা বলতে পারি।  

জন্মের পর থেকেই আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলি, ভাব প্রকাশ করি, আবেগ ভাগ করি। আমাদের সুখ, দুঃখ, ভালোবাসা—সবকিছুই মায়ের ভাষার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেমন আমরা জন্মভূমিকে ভালোবাসি, তেমনই মাতৃভাষার প্রতিও আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকা উচিত। ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অস্তিত্বের প্রতিচ্ছবি।  

বাঙালির ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা আমাদের ভাষার সংগ্রামকে বিশ্ব দরবারে সম্মানিত করেছে।  

আমাদের উচিত এই ভাষার মর্যাদা রক্ষা করা, শুদ্ধভাবে ব্যবহার করা এবং নতুন প্রজন্মকে এর গুরুত্ব বোঝানো। কারণ ভাষা শুধু কথার মাধ্যম নয়, এটি আমাদের আত্মপরিচয়, আমাদের গৌরব, আমাদের ঐতিহ্য। ভাষা রক্ষার এই শপথ হোক চিরন্তন।ভাষার মাসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা গুলো তুলে ধরেছেন -তানজিল কাজী 

বাংলার মাটি আর বাঙালির হৃদয়ের সুর একাকার। এখানে ভাষা কেবল শব্দের মালা নয়, এ ভাষার জন্য রক্ত ঝরেছে, জীবন দেওয়া হয়েছে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায়। সেই রক্তের অক্ষরে লেখা ইতিহাস বাংলাকে করেছে মহীয়ান, বাঙালিকে করেছে অমর। ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গের নজির বিশ্বে বিরল—এটাই বাঙালির অসামান্যতা। 

বাঙালির মহত্ত্ব তার সংস্কৃতির গভীরতায়, স্বপ্ন দেখার সাহসে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রক্তে লেখা বিদ্রোহে। রবীন্দ্রনাথের কাব্যে, নজরুলের চেতনায়, লালনের সুরে, প্রতিবাদের মিছিলে এই জাতি বারবার প্রমাণ করেছে: তাদের আত্মা অপরাজেয়। বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি শিকড়ের মতো প্রোথিত—বন্যার জলেও যা টিকে থাকে, ঝড়েও মাথা নোয়ায় না। 

ভাষা আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস, সংগ্রামের ইতিহাস আমাদের প্রেরণা। বাঙালির মহত্ত্ব কোনো অহংকার নয়, এটি এক গৌরবগাথা—যে গল্প বলতে বলতে বাংলার শিশুরা বড় হয়, যুবকেরা স্বপ্ন বোনে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এগিয়ে যায় আলোর দিকে। এ ভাষা, এ মানুষ—যেন পদ্মার স্রোত: অবিরাম, অদম্য, চিরজীবনের।

মেহেদী হাসান 

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

মাতৃদুগ্ধ যেমন শিশুর সর্বোত্তম পুষ্টি তেমনি মাতৃভাষার মাধ্যমে ঘটতে পারে একটি জাতির শ্রেষ্ঠ বিকাশ। মানুষের পরিচয়ের সেরা নির্নায়ক তার মাতৃভাষা। আক্ষরিক অর্থে মাতৃভাষা মানে মায়ের ভাষা বোঝায়। মায়ের ভাষায় কথা বলে তথা আবেগ-অনুভূতি,আশা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে যতটা আত্নতৃপ্তি পাওয়া যায় অন্য কোনো ভাষায় সেটি সম্ভব নয়। পৃথিবীতে প্রায় ৭ হাজারের ও বেশি ভাষা রয়েছে কিন্তু মাতৃভাষার চেয়ে মধুর ভাষা একটিও নেই।বাংলা আমাদের মাতৃভাষা।

পৃথিবীতে বাংলাদেশ ই একমাত্র দেশ যে দেশের মানুষ তাদের মাতৃভাষা রক্ষার্থে প্রান দান করেন শহীদ সালাম,জব্বার,রফিক,বরকতসহ আরো অনেক তাজা প্রান।তাদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। ভাষা শহীদদের স্মরণ করে একুশে ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয।১৭ ই নভেম্বর ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এর ৩১তম সম্মেলনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

বর্তমানে পৃথিবীর মোট ১৮৮ টি দেশে পালিত হয় এই দিনটি। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে আমরা ফুল অর্পণ করে থাকি। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। ভাষাশহীদেরা তাদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের বিশ্ব দরবারে এক সম্মানের জায়গা নির্ধারিত করে দিয়েছে। বিশ্ব দরবারে সহস্র প্রানে আজও বেজে ওঠে

  আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।

ইশরাত জাহান হাফসা

ইংরেজি বিভাগ,সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর।

“মাতৃভাষা” একটি আবেগ, আকাঙ্খা ও ভালোবাসার নাম। মায়ের ভাষায় কথা বলতে আমরা যতোটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি অন্য কোনোও ভাষায় তা সম্ভব নয়।

শেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ, ইঙ্গ-মোঙ্গল, প্রাচ্য-পাশ্চাত্য হাজারো জাতি, হাজারো ভাষা পৃথীবিতে থাকলেও বাঙালি জাতিই পৃথীবিতে প্রথম যারা মায়ের ভাষা রক্ষার্থে রাজপথে নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলো। তাইতো ভাষার প্রতি এই ভালোবাসার উপহারস্বরূপ ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা” হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

আর আমরা ভাষা এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাভরে গলা ছেড়ে গেয়ে যাই, ” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?” 

হাজারোও ভাষার মধ্যে আমার মায়ের মুখের ভাষা-ই সেরা। তাই তো কবি অতি আবেগে আপ্লুত হয়ে কন্ঠ ছেড়ে গেয়েছেন; আমি বাংলায় হাসি- বাংলায় কাদি, বাংলায় জেগে রই। 

মাতৃভাষার এই অমেয় সুধা যাদের কারণে আমরা পেয়েছি তাদের প্রতি সীমাহীন শ্রদ্ধা, বুকভরা ভালোবাসা। তাদের এই মহত্ত্ব ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষার সম্মান রক্ষা করতে আমরা বাঙালি জাতি সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সর্বদা আপোষহীন। 

মাহমুদুল হাসান সুমন

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ 

ঢাকা কলেজ, ঢাকা।