মোঃ মেহেদী হাসান, ঢাকা (মহানগর প্রতিনিধি):
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর চলা সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। সংঘর্ষের মূল কারণ হিসেবে দাবি করা হচ্ছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ইস্যু নিয়ে দ্বন্দ্ব।
সূত্র জানায়, সাত কলেজের অধিভুক্ত শিক্ষার্থীরা একাডেমিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এসব দাবিকে কেন্দ্র করে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে ঢাবির প্রো-ভিসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার প্রতিবাদে সাত কলেজ, বিশেষ করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়।
সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। ধানমন্ডির সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়, মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড়ে সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং রাত আনুমানিক ১টার পর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করেন।
অন্যদিকে, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে এগোতে থাকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। উভয় পক্ষ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে দুই পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা শুরুতে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়।
এই সংঘর্ষ রাত আনুমানিক ১২টার দিকে শুরু হয়। এর আগে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। সংঘর্ষটি নিউমার্কেট, নীলক্ষেত এবং তার আশপাশের এলাকায় ঘটে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত একজন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার মাথা ও মুখমণ্ডলে রক্তাক্ত জখম রয়েছে। অন্য একজন শিক্ষার্থীর পায়ে আঘাত লেগে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা দৈনিক সকাল কে জানিয়েছেন, সংঘর্ষে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।
এই ঘটনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিষ্কার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।