মোঃ আলী মোর্তজা, বুটেক্স প্রতিনিধি:
সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়মিত যাতায়াতের জন্য বনশ্রী রুটে চালু হলো বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) নিজস্ব বাস ‘রেশম’। প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পরে এই প্রথম কোনো রুটে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস পেলো বুটেক্স শিক্ষার্থীরা। এতে আনন্দিত বুটেক্সের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ। বাসটি বুটেক্স থেকে বনশ্রী, মেরাদিয়া, ডেমরা, স্টাফ কোয়ার্টার রুটে চলাচল করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন তহবিলে পর্যন্ত জ্বালানির খরচ না থাকায় বাসটিকে ডিজেল ইঞ্জিন থেকে সিএনজিতে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিএনজিতে রূপান্তরের দায়িত্ব দেয়া হয় ফাজ সিএনজি অ্যান্ড এলপিজি নামক প্রতিষ্ঠানকে। সিএনজিতে রূপান্তর শেষে বৃহস্পতিবার বাসটিকে পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হয়। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন বুটেক্সের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. শেখ মো. মামুন কবীর, ছাত্র কল্যাণের পরিচালক ড. রিয়াজুল ইসলাম, যানবাহন কর্মকর্তা ড. মুরাদ আহমেদ, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের একাংশ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোটের মাধ্যমে বাসটির নাম নির্ধারণ করা হয় ‘রেশম’। অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইফতেখার আলম ইভানকে বাসটি পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।
ইফতেখার আলম ইভান বলেন, বনশ্রী রামপুরা রুট বাসের জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হলো। প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই এবং ভবিষ্যতে এমন আরো শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত প্রশাসন থেকে আশা করি।
ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রোডে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো হচ্ছে অধিক যাতায়াত খরচ এবং যাতায়াত কালে একটা লম্বা সময় নষ্ট হওয়া। এছাড়াও এই রুটের চিরায়ত সমস্যা হলো লাইসেন্স বিহীন চালক, ফিটনেস ছাড়া যানবাহন ও নিয়মিত দুর্ঘটনার শঙ্কা। বুটেক্স প্রশাসনের এই নতুন উদ্যোগ আমাদেরকে অনেকটা শঙ্কামুক্ত পরিস্থিতি উপহার দিয়েছে।
বুটেক্সের উপাচার্য বলেন, আমি খুবই আনন্দিত যে দীর্ঘদিন পরে হলেও আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হতে যাচ্ছে। আমি আশা করব, এই বাসটি শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে আনা-নেওয়া করবে পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ভোগান্তির শিকার না হয় এবং সঠিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পারে ও পড়াশোনা করতে পারে এ বিষয়টি খেয়াল রাখবে।
যানবাহন কর্মকর্তা ড. মুরাদ আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রাণ। যখন বাস চলবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বাস চলছে মানুষ দেখবে এটা একটা আলাদা অনুভূতি ছাত্রদের জন্য। ছাত্রদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল তারা চেয়েছিল তারা নিজস্ব বাসে চলবে। আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি। মাননীয় উপাচার্য স্যার এবং পিএনডির ডিরেক্টর স্যার যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে এটা সম্পাদন করেছে। আমাদের আরো একটা বাস আছে সেটাও আমরা চালু করবো ইনশাআল্লাহ। সামনে আরো বাস আসবে, সেগুলো আমরা রুটের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করবো। আশা করি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যেটা সুবিধা হবে মাননীয় ভিসি স্যার এবং প্রশাসন সেটা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতে নিজস্ব বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রান্ডিং করে। যেখানে বিআরটিসির বাসে নানা ভোগান্তির পাশাপাশি এর জ্বালানি ব্যয় মেটাতে সরকারের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসে একদিকে যেমন ভোগান্তি নেই অন্যদিকে সরকারের জ্বালানি খরচও অনেক কম হয়। তাই বাকী সকল রুটে বিআরটিসি বাসের বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস চান তারা।