মামুনুর রহমান (ঢাকা প্রতিনিধি):
২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে ছাত্র আন্দোলনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ছবিতে দেখা যায়, সাদা গেঞ্জি ও লুঙ্গি পরা একজন রিকশাচালক, যার কপালে বাঁধা লাল-সবুজের পতাকা। তিনি রিকশায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীদের স্যালুট জানাচ্ছেন।
তার এই ভঙ্গি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ছাত্র আন্দোলনের প্রতীক হয়েওই সময় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমেছিলেন। তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এই রিকশাচালক তার রিকশা থামিয়ে স্যালুট করেন এবং আন্দোলনের প্রতি নিজের একাত্মতা প্রকাশ করেন। যদিও তার নাম ও পরিচয় অজানা রয়ে গেছে, তার এই ছবি প্রতীকী অর্থে আন্দোলনের শক্তি ও সংহতির বার্তা ছড়িছাত্র আন্দোলনের এই উত্তাল সময়, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনের সড়কে রিকশাচালকরাও সরাসরি আন্দোলনে অংশ নেন। কপালে লাল কাপড় বেঁধে এবং হাতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে তারা বিভিন্ন সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।
এক রিকশাচালক বলেন, “আমাগো পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সারাদিন রিকশা চালায়ে কিছুই আর হাতে থাকে না। তাই রুজি বাদ দিয়ে মাঠে নামছি। ছেলেগো যেভাবে মারে, গদিতে থাকার অধিকার তাদেএই বক্তব্য আন্দোলনের বার্তা আরও ছড়িয়ে দেয়। রিকশাচালকদের এমন দৃঢ় অবস্থান ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে আরও জোরদার করে।
ভাইরাল হওয়া সেই রিকশাচালকের ছবি এখন গ্রাফিতি হয়ে নবম শ্রেণির বাংলা বইয়ে স্থান পেয়েছে। গ্রাফিতি চিত্রটি ছাত্র আন্দোলনে সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত হয়েছে । সেখানে লেখা ছিল “মানুষ হইতে হবে মানুষ যখন”। এক শিক্ষার্থী জানায়, “এই ছবি শুধু একটি মুহূর্ত নয়, এটি আমাদের আন্দোলনের চেতনাকে প্রকাশ করে। রিকশাচালক মামার স্যালুট আমাদের মধ্যে নতুন স্পৃহা সৃষ্টি করেছে।”
২০২৪ সালের জুলাইয়ের এই আন্দোলন ও রিকশাচালকের ছবি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রতিবাদ ও ঐক্যের এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে থাকবে। তার স্যালুট এখন জাতীয় আন্দোলনের একটি অবিচ্ছেদ্য স্মৃতি।