বছরের প্রথম থেকেই নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের পথচলা শুরু হলেও আওয়ামী সরকার পতনের পর এবার নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি বই ছাপা কার্যক্রম। ফেনীতে প্রাথমিক শিক্ষার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ বই বিতরণ সম্পন্ন হলেও চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই এখনও পুরোপুরি আসেনি।
অন্যদিকে, মাধ্যমিক পর্যায়ে বই সংকটের কারণে এখনো অধিকাংশ শিক্ষার্থীর হাতে উঠেনি নতুন বই। নতুন শিক্ষাবর্ষে দেরিতে বই পাওয়া নিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ বলছেন চলতি মাসেই শিক্ষার্থীদের হাতে উঠবে নতুন বই।
জেলা শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্যে, ফেনীতে মাধ্যমিক ও মাদরাসায় মোট শিক্ষার্থী ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৮ জন। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বইয়ের মোট চাহিদা ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ৭৭৬টি। কিন্তু ফেনীতে এখন পর্যন্ত বই এসেছে ৪৭ হাজার ৪০০টি। যা চাহিদার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। জেলায় এখন পর্যন্ত ফেনী সদরে মাধ্যমিকে ৯ম শ্রেণির তিনটি বিষয় করে ৩৪ হাজার ৫০০টি বই ও দাখিলে ৭ম শ্রেণির ১২ হাজার ৯০০টি বই এসেছে। এছাড়া সোনাগাজী উপজেলায় মাধ্যমিকে ৯ম, ১০ম শ্রেণির শ্রেণির দুইটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত) ২৫ হাজার ৮০০টি বই ও দাখিলে ৭ম শ্রেণির তিনটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত, ইংরেজি) ৮ হাজার ৪০০টি বই এসেছে।
ছাগলনাইয়া পাইলটের এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে নতুন কারিকুলামে নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিয়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। এখন আবার এটি বাদ হয়ে আগের কারিকুলাম শুরু হচ্ছে।
চাঁদগাজী হাইস্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, বার বার কারিকুলাম পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের। শিক্ষাবর্ষের সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি সিলেবাস প্রণয়ন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য কিছুটা হলেও সুবিধা হবে।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফি উল্ল্যাহ দৈনিক সকালকে বলেন, এখন পর্যন্ত ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলায় কিছু বই এসেছে। জেলায় চাহিদার সম্পূর্ণ বই আসতে আরও প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে।
এদিকে, মাধ্যমিকের মতো এবার প্রাথমিকেও এখনো শতভাগ বই আসেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকে জেলায় মোট বরাদ্দকৃত বইয়ের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৬টি। এরম মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই এসেছে। এছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির চাহিদার ৩ লাখ ১৬১টি বই এখনো আসেনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শতভাগ বই এসেছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইও শিগগিরই আসবে। শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিদ্যালয় থেকে বই সংগ্রহ করবে। এদিকে, বছরের প্রথমদিন বই বিতরণের কোন আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও কিছু কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম, ২য় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই তুলে দেয়া হয়৷