বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আমরা ভুলে যাই নাই, আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় এই ইসকন কীভাবে গত ১৬ বছর বেড়ে উঠে আজকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে স্বৈরাচারের সঙ্গী হয়ে ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই- ভারতের বুবু, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হবে, আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেবো।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস মোড়ে ইসকনের হামলায় নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা শেষে আয়োজিত শোক এবং সম্প্রীতি সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় দেশে সকল ধর্মের সহাবস্থান থাকবে জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমাদের দেশে সকল ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। যে হিন্দু সে হিন্দু ধর্ম পালন করবে। যে বৌদ্ধ সে বৌদ্ধ ধর্ম পালন করবে। যে খ্রিস্টান সে খ্রিস্টান ধর্ম পালন করবে। আমরা সবার অধিকার রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করবে, সেসব উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।
অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ইসকনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।
সমাবেশে নাগরিক কমিটির সদস্য ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, যে রক্তের উপর দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, যে রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সেই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এই চিন্ময়রা উসকানি দেয়।
সেই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে খুনি হাসিনারা উসকানি দেয়। সেই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে জঙ্গি ইসকনরা উসকানি দেয়। সেই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ভারতের কিছু প্রেত্মারা উস্কানি দেয়। আমরা স্পষ্ট করে সকল প্রেত্মাদেরকে বলে দিতে চাই- আমরা ১৬ বছরের খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি এবং ছোটোখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা আমাদের জন্য হাতের ময়লা।
সারজিস আলম আরো বলেন, আমরা সকল ধর্মের প্রতি সহানুভুতিশীল। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সহানুভুতিকে দুর্বলতা মনে করে, আমরা কি তাদেরকে ছেড়ে দিবো? আমরা কি এই জঙ্গি ইস্কনকে ছেড়ে দিবো? আমরা আমাদের সাইফুল ভাইয়ের খুনিদের বিচার দেখতে চাই। বীর চট্টলাবাসী আপনাদেরকে বলে দিতে চাই- আমাদের চারপাশে অনেক চক্রান্ত ছিল, আরো চক্রান্ত হবে; কিন্তু আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- প্রশাসনের যেসকল জায়গায় স্বৈরাচারের দোসরেরা বিরাজমান, তাদেরকে সমূলে নির্মূল করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। দাদাবাবুদের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। ভারতীয় কোনো আগ্রাসন বাংলাদেশে চলবে না। ভারতীয় কোনো দাদাগিরি বাংলাদেশে চলবে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে একতা-ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু যদি কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদিতা পরিচালনা করে, যদি কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে; তাহলে আমরা বাংলাদেশের ছাত্রজনতা তাদেরকে প্রতিহত করতে একবারও ভাববো না।