দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সকল জল্পনা কল্পনা শেষে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে ফের পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে পর্যটকরা দলে দলে টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে জড়ো হয়েছেন।
কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে পর্যটক জাহাজ এম ভি পারিজাত ও এম ভি রাজহংস করে যাত্রা শুরু করেছেন সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে। শনিবার থেকে কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন, কেয়ারি সিন্দাবাদসহ আরো সাতটি জাহাজ চলাচল করার কথা রয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে শুক্রবার থেকে জাহাজ চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান।
এদিকে শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রায় ৬’শ-৭’শ পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন এম ভি পারিজাত ও এম ভি রাজহংস।
টেকনাফ সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা খুবই আনন্দিত। মো. ফারুক নামে এক ব্যবসায়ী জানান-আমরা পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ী ছিলাম। হঠাৎ করে জাহাজ চলাচল বন্ধ হওয়ায় পরিবার নিয়ে দু’বেলা খেতে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। অনেক টাকা লোকসান হয়েছে। অবশেষে জাহাজ চলাচল হওয়ার স্বস্তি হলো।
সেন্ট মার্টিনের ইউপি মেম্বার খুরশিদ আলম বলেন, সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দারা পর্যটক নির্ভর ব্যবসা ও আয় রোজগার করে থাকেন। এতোদিন টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। জাহাজ চলাচল হওয়ায় ঈদের নতুন চাঁদ উঠার মতো খুশি সেন্টমার্টিনবাসী।
ঢাকা থেকে আসা ৪০ জনের একটি পর্যটক দল কাঠের বোটে করে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য টেকনাফে এসেছিলেন। হঠাৎ করে পর্যটক জাহাজ চলাচলের খবর পেয়ে টিকেট কেটে জাহাজে করে যাচ্ছেন।
তাদের দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে ছিল সেন্ট মার্টিন ভ্রমনের। অবশেষে পর্যটক জাহাজে করে যেতে পারায় তারা সকলে বেজায় খুশি।
সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করতে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপরও উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত বিষয়টি তদারকি করবে। এছাড়া পরিবেশ ক্ষতি হয় এমন কিছু যাতে না হয়, সেজন্য সকলকে সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া জাহাজ ঘাট থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নাফ নদীর বিভিন্ন জায়গায় বালুচর জেগে উঠাসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে ১ নভেম্বর থেকে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।