রুমানা খান বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা জুড়ে শীতের আগমনী বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর, ঠান্ডা হাওয়া, আর রোদেলা দিনের হালকা তাপ জানান দিচ্ছে, শীতের ঋতুরাজ এসে গেছে।
বাউফলের গ্রামীণ জনপদে ঘুরে দেখা যায়, শীতের প্রকৃতি যেন এক অনন্য রূপ ধারণ করেছে। ভোরের কুয়াশা মোড়ানো মাঠ, ধানের খেত, আর নদীর ধারে ঝিরঝিরে হাওয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে এক প্রশান্তি এনে দেয়। সকালে গ্রামের শিশু-কিশোররা খেজুরের রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত। খেজুরের গাছে রসের হাঁড়ি ঝোলানো, ভোরে সেই তাজা রস পান করার মজা যেন শীতকালকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। তবে আধুনিক সভ্যতার কারণে এই দৃশ্য এখন আগের মতো দেখা যায় না।
বাউফলের স্থানীয় বাজারগুলোতেও শীতের আমেজ স্পষ্ট। বিভিন্ন মৌসুমী শাকসবজি যেমন লাউ, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আর মুলা সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। এ সময়টাতে পিঠা-পুলির আয়োজনও শুরু হয়। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা আর পাটিসাপটার ঘ্রাণ পুরো এলাকাকে মাতিয়ে রাখে। এছাড়াও বাউফলে বিভিন্ন বাজারে সন্ধ্যা হলেই রাস্তার পাশে দেখা যায় বিভিন্ন প্রকার শীতের পিঠা বিক্রি করতে।
শীত শুধু প্রকৃতি আর খাদ্যেই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও প্রভাব ফেলে। গরম কাপড়ে সজ্জিত শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত সকলে সকালে রোদের তাপ উপভোগ করেন। সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে জমে ওঠে পিঠা খাওয়ার আড্ডা।
বাউফলের নদী-তীরবর্তী এলাকাগুলো শীতকালে যেন আরও মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে। তেঁতুলিয়া আর বিভিন্ন খালের জলে কুয়াশার আবরণ তৈরি করে এক স্বপ্নময় দৃশ্য। এ সময় নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেকেই ছুটে যান ।
শীতের এই আমেজ শুধু আবহাওয়ার পরিবর্তন নয়, এটি বাউফলের মানুষের জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিবারের মতো এবারও শীত বাউফলের মানুষের জীবনে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে এসেছে। শীতকালীন এই ঋতু প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্কের প্রতিচ্ছবি। তবে এর পাশাপাশি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কথাও চিন্তা করতে হবে বিত্তবানদের কেননা উপযুক্ত শীত বস্রের অভাবে তারা মানবেতর জীবনযাপন করে।