আক্কাছ আলী টঙ্গীবাড়ি (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী বিখ্যাত আলদির মাঠা ৩২ বছর ধরে তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। আর এই মাঠা বিক্রি করে দেশব্যাপী খ্যাতি পেয়েছেন কমল ঘোষ। মাঠার স্বাদ নিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন ছুটে আসেন অজস্র মানুষ। প্রতিদিন প্রায় ৩০ মণ মাঠা বিক্রি হয়।
মূলত আলদি বাজার এলাকায় সেতুর ঢালে কাঠের মাচার ওপর বড় পাতিল ভর্তি করে ছানা, মাঠা ও মাখন বিক্রি করেন কমল। এখানে আগে তিনি একাই ব্যবসা করলেও, তার দেখাদেখি আরও ৪-৫ জন মাঠার দোকান দিয়ে বসেছেন এখানে। তবে কমলের দোকানেই দেখা গেল ভিড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোটার আগেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছে মাঠাপিপাসুরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমল ঘোষের মাঠার দোকানে সারি দীর্ঘ হতে থাকে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর মাঠা সংগ্রহ করে পান করছেন মাঠাপিপাসুরা।
পিপাসা মেটানোর পর আবার বোতলভর্তি করে নিয়েও যাচ্ছেন পরিবার পরিজনদের জন্য। স্বাদ এবং খাঁটি দুধের হওয়ায় আলদি মাঠার কদর বেশি। এখানে প্রতি লিটার মাঠা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা এবং প্রতি গ্লাস ৩০ টাকা হিসাবে।
মাঠা বিক্রেতা ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩২ বছর ধরে আলদি বাজারে মাঠা বিক্রি হচ্ছে। এখানকার মাঠা দেশের অন্য যেকোনো মাঠার চেয়ে আলাদা স্বাদের। প্রথম দিকে শুধু কমল ঘোষ নামের এক ব্যক্তি একাই মাঠা বিক্রি করতেন। তাঁর মাঠার স্বাদের জন্য সুখ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিদিন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, দোহার, সিরাজগঞ্জ, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন মাঠার স্বাদ নিতে আসেন। সাত-আট বছর ধরে কমল ঘোষের সঙ্গে আরও কয়েকজন মাঠার ভাসমান দোকান নিয়ে বসেছেন। স্বাদে বৈচিত্র্য ও খাঁটি দুধের হওয়ায় আলদি মাঠার কদর বেশি। ঢাকার থেকে মাঠা খেতে এসেছেন ইকবাল নামের একজন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ব্লগে আলদির মাঠার ভিডিও দেখেছিলাম।
আজ ভোরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে এসেছি। এখানকার মাঠা খেয়েছি। মাঠার স্বাদ অতুলনীয়। ভাবছি, সময়-সুযোগ পেলেই মাঠা খেতে আসব।’ এই মাঠার স্বাদ ভোলার নয় জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা মো. রুবায়েত বলেন, ‘আলদির মাঠার কথা অনেক শুনেছি। আজ দুই বাচ্চা এবং বন্ধুদের নিয়ে এসেছি। পরিবারের জন্য ছয় লিটার মাঠা সঙ্গে নিয়েছি।’
প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত মাঠা বেচাকেনা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, শ্রীনগরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের লোকজন এখানে মাঠা খেতে ছুটে আসেন। শীতকালে অনেকেই ভোরবেলা মোটরসাইকেল নিয়ে চলে আসেন। দোকানের সামনে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। ভিড় সামাল দিতে ৭-৮ জন লোক কাজ করে।
তবে তার কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় ৫০-৭০ হাজার টাকার বেচাকেনা হয় দোকানে। শুক্রবারে বিক্রির পরিমাণ আরও বাড়ে।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?