আক্কাছ আলী টঙ্গীবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সিগঞ্জের হিমাগারগুলোয় পর্যাপ্ত আলু মজুদ থাকলেও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি দামে। উৎপাদক পর্যায়ে এক কেজি আলুর দাম ২৭ টাকা। কয়েকবার হাতবদলের পর ভোক্তার কাছে সে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকায়। গত বছর নভেম্বরে খুচরা বাজারে আলুর দাম ছিল ৪০ টাকা। অবশ্য দাম বাড়ার জন্য খুচরা বিক্রেতারা দায়ী করছেন পাইকারদের। আর পাইকাররা দুষছেন হিমাগার সিন্ডিকেটকে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাত বদলালেই বাড়ছে আলুর দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে সিন্ডিকেট। ফোনের মাধ্যমে দাম বাড়াচ্ছেন মজুদদাররা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, মুন্সিগঞ্জে গত মৌসুমে ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল। এতে ১০ লাখ টনেরও বেশি উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে আলু রোপণ।
হিমাগার ও বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হিমাগারে আলু সংরক্ষণের পরই শুরু হয় দাম নিয়ে কারসাজি। বর্তমানে জেলার ৫৪ হিমাগারে মজুদ রয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার টন আলু। কৃষকের কাছ থেকে এক কেজি আলু কেনা হচ্ছে ২৮ টাকায়।
হিমাগারে সংরক্ষণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতি কেজিতে যোগ হচ্ছে আরো ১০ টাকা। সব মিলিয়ে ৩৮ টাকা খরচ হলেও হিমাগার গেটেই বিক্রি করা হচ্ছে ৪৭ টাকা দরে। এরপর ৫ টাকা বাড়িয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেজিপ্রতি ৫২ টাকা বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতাদের কাছে। আর খুচরা বিক্রেতারা ৬-৮ টাকা দাম বাড়িয়ে ভোক্তার কাছে বিক্রি করছেন ৫৮-৬০ টাকা দরে।
সবজি ব্যবসায়ী ইয়াসিন ব্যাপারী বলেন, ‘বর্তমানে খুচরা বাজারে গত সপ্তাহের চেয়ে ৫-১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। এর মধ্যে লাল আলু ৬০ ও সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়। হিমাগার থেকে ৪৭ টাকা কেজি দরে কেনার পর ৫২ টাকায় বিক্রি করছেন পাইকাররা।
মুক্তারপুর কদম রসুল কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার দুলাল চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘প্রতিবার হাতবদলে প্রতি কেজিতে ৫-১০ টাকা দাম বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। কর্তৃপক্ষ তদারকি করলেই এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। জেলায় বছরে আলুর চাহিদা থাকে প্রায় দেড় লাখ টন। কিন্তু উৎপাদন হয় ১০ লাখ টনের বেশি। হিমাগারগুলোয় উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। আমরা কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেয়া ভাড়াতেই আলু সংরক্ষণ করছি। দাম বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের কোনো হাত নেই।’
জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সামির হোসেন সিয়াম বলেন, ‘আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে খুচরা বাজার থেকে শুরু করে হিমাগার পর্যন্ত তদারকি করা হচ্ছে। কেউ যাতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আলুর দাম বাড়াতে না পারেন সেদিকে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক নানা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনেকেই বাজার অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করেছেন।’