সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সাম্প্রতিক এক ঘটনায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়, যা এখন দেশজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বাঁশ হাতে কয়েকজন বাংলাদেশি যুবক বিএসএফ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। একপর্যায়ে তারা তীব্রভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সামনে এগিয়ে যান। এ সময় একজনকে বলতে শোনা যায়,
“এই পাশে এখন আর হাসিনা নেই, আপনাদের ইচ্ছেমতো কিছু হবে না।”
ঘটনাটি স্পষ্ট করে দেয় যে সীমান্তে দীর্ঘদিনের দখল, হুমকি ও আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতা আর বাংলাদেশিরা মেনে নেবে না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যেভাবে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে, সে পরিবর্তনের প্রতিফলন এখন মাঠপর্যায়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
এই পরিস্থিতি এমন সময় সৃষ্টি হয়েছে, যখন দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে অনুপ্রবেশ ও ভারতীয় নাগরিকদের পুশ-ইন ঘটনা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিশেষ করে খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে সম্প্রতি ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশি পরিচয়ে জোর করে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগে জনআলোড়ন তৈরি হয়।
সীমান্তে ঘন ঘন এমন অনধিকার প্রবেশ ও আধিপত্যমূলক আচরণ শুধু আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থীই নয়, বরং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক দায়িত্বশীলদের মতে, যেকোনো নাগরিককে গ্রহণ করার আগে তার পরিচয়, নাগরিকত্ব ও প্রমাণপত্র যাচাই করা হবে। আর এ প্রক্রিয়া হতে হবে বৈধ ও আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক চ্যানেলে, কোনও একতরফা চাপিয়ে দেওয়া পদ্ধতিতে নয়।
স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমান বাস্তবতায় বাংলাদেশে আর আগের মতো রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে এদেশের ভূখণ্ড নিয়ে ‘ইচ্ছেমতো খেলা’ চলবে না। জনগণ এখন সচেতন এবং প্রতিরোধে প্রস্তুত। সীমান্তে দাঁড়িয়ে একজন বাংলাদেশির সেই কণ্ঠে উচ্চারিত সাহসী বক্তব্য যেন আজ সার্বভৌম বাংলাদেশে জেগে ওঠা নতুন বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?