মোঃ জিয়াউল ফকির, পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এফ করিম আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ রিয়াজুল ইসলামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে একই মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মোঃ মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত আরবী প্রভাষক মাওলানা মাহাবুবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরেই মাদ্রাসায় অনিয়মিত। তিনি কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়ালখুশি মতো মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করেন।
এই বিষয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ রিয়াজুল ইসলাম প্রতিবাদ করলে প্রভাষক মাহবুবুর রহমান তার সাথে অফিস কক্ষে প্রথমে কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন।
পরিস্থিতি এক পর্যায়ে চরম আকার ধারণ করে। অভিযোগ অনুযায়ী, মাওলানা মাহাবুবুর রহমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন। অন্যান্য শিক্ষক এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে তিনি আরো উত্তেজিত হয়ে অধ্যক্ষ মোঃ রিয়াজুল ইসলামকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।
শুধু তাই নয়, মারতে মারতে তাকে মাদ্রাসার কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে মাদ্রাসার মাঠে ফেলে দিয়েও মারধর করা হয়। পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষকরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, “মাওলানা মাহাবুবুর রহমান নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না। সকাল ১০টায় তার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি প্রায়শই সকাল ১১টার পরে আসেন।
এমনকি মাদ্রাসা ছুটি হওয়ার নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি চলে যান।” অন্যান্য শিক্ষকরাও এই অনিয়মের প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত প্রভাষক তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন বলে অধ্যক্ষ জানান।
অধ্যক্ষ আরও অভিযোগ করেন যে, অভিযুক্ত প্রভাষক বর্তমান চাকরির পাশাপাশি ইন্দুরকানী বাজারে ও পত্তাশী বাজারে মেসার্স আব্দুল্লাহ নামে দুটি ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এছাড়াও তিনি প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর ইন্দুরকানী সদরের ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে ইন্স্যুরেন্সে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। অধ্যক্ষ রিয়াজুল ইসলাম আরও গুরুতর অভিযোগ করেন যে, তার অনুপস্থিতিতে অভিযুক্ত প্রভাষক তার স্বাক্ষর জাল করে একটি ভুয়া ভাউচার দাখিল করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার এক ব্যক্তি জানান, অভিযুক্ত প্রভাষক টাকা ও জামায়াতের সমর্থক হওয়ায় ব্যাংক গ্রাহকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত আরবী প্রভাষক মোঃ মাহবুবুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ রিয়াজুল ইসলামকে অদক্ষ এবং পাগল বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এক এক সময় এক একটি নিয়ম চালু করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান বিন মোহাম্মদ আলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তবে এই বিষয়ে আমি এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?