মোঃ জিয়াউল ফকির,পিরোজপুর প্রতিনিধি:
পিরোজপুর শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া ভাড়ানী খালকে দখলমুক্ত করে পুনঃখননের কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও পিরোজপুর পৌরসভার সক্রিয় অংশগ্রহণে গতকাল এই অভিযান শুরু হয়।
উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দিনেই খালের দুই পাড়ের বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বড় আকারের গাছপালা কেটে ফেলা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাকা ভবনও এই উচ্ছেদ অভিযানের আওতায় এসেছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযানের পূর্বে সংশ্লিষ্ট দখলদারদের যথাযথ নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল।
শহরের প্রবীণ আইনজীবী আবুল কালাম আকন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ২৫ ফুট চওড়া ও ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটির দুই পাড়ের অধিকাংশ বাসিন্দা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে এর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে আসছিল।
এর ফলে শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছিল। বর্তমান এই পদক্ষেপের মাধ্যমে খালটি তার আগের রূপে ফিরে পাবে বলে আশা করা যায়।”
গত বছরের ৫ই আগস্ট পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে পিরোজপুরের সাধারণ মানুষ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে শহরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদন জানায়। এরই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন জনস্বার্থে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যার মধ্যে ভাড়ানী খাল পুনঃখনন ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অন্যতম।
স্থানীয় সমাজসেবক তারিক রানা চৌধুরী জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “শহরের পুরনো ভাড়ানী খাল সংস্কার ও পুনঃখননে জেলা প্রশাসক যে উদ্যোগ নিয়েছেন এবং সাধারণ নাগরিকদের সম্পৃক্ত করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। পর্যায়ক্রমে পিরোজপুরের অন্যান্য খালগুলোকেও খনন ও দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান এ প্রসঙ্গে বলেন, “পিরোজপুর পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল এই খালটি খনন করা এবং এর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা।
খালের জায়গা বেদখল হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে শহর একটি দূষিত শহরে পরিণত হয়েছিল। এই খাল শুধু পানি প্রবাহের জন্যই নয়, শহরের পরিবেশ সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা খাল খননের কাজ শুরু করেছি এবং আশা করি খালের দুই পাড়ের বাসিন্দারা এই মহৎ উদ্যোগে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।”

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?