জাবি প্রতিনিধিঃ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাকসু নির্বাচনে গণঅভ্যুত্থানে হামলাকারী এবং ‘শামীম মোল্লার আত্মস্বীকৃত ও প্রমাণিত খুনিদের’ অংশগ্রহণ না করার দাবি জানিয়েছে।
শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়নের জাবি শাখার সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি এ দাবি জানান। একইসঙ্গে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও নির্দিষ্ট দায়িত্ব নিশ্চিত করতে সংশোধিত নীতিমালা ঘোষণার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রগতি ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সহিংস রূপ দেখিয়েছে এবং ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশ অস্থিতিশীল করেছে—তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের প্রতি চরম অবমাননা।”
তাঁরা আরও বলেন, “গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ভিডিও এখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা শামীমকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ভিডিও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাত্র ছয় মাসের সাময়িক বহিষ্কারাদেশ দিয়ে তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করেছে।
সবচেয়ে হতাশাজনক হলো, ওই সহিংস ঘটনার অভিযুক্তদের কেউ কেউ প্রশাসনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে এবং ক্যাম্পাসে গর্বভরে ফিরে এসেছে। এটি গণতন্ত্রের নামে চরম দ্বিচারিতা ও বিচারব্যবস্থার প্রতি অবমাননার শামিল।”
নেতারা দাবি জানান, ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত, আত্মস্বীকৃত ও প্রমাণিত খুনি এবং জুলাই অভ্যুত্থানে হামলাকারীদের যেন জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া হয়। তাঁরা বলেন, “জাকসুকে ব্যবহার করে খুনি ও হামলাকারীদের পুনর্বাসনের পাঁয়তারা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটজন নামীয় ও ২০–২৫ জন অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে।
পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হয়, যা গত ১৯ মার্চ প্রত্যাহার করা হয়।
এ মামলায় তিন অভিযুক্ত—আতিক, রায়হান ও সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হলেও অভিযুক্ত হামিদুল্লাহ সালমান, আহসান লাবিব
ও মোহাম্মদ রাজোন মিয়া এখনও গ্রেপ্তার এড়িয়ে প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, যা জাকসু নির্বাচন ঘিরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এছাড়া, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে প্রশাসন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ২৫৯ জন নেতা-কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
একইসঙ্গে ছাত্রদলের এক নেতা ১৭৮ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলার অভিযোগে মামলা করেন।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?