খুলনা প্রতিনিধিঃ
খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে ব্যক্তিমালিকানাধীন কৃষি জমি থেকে মাটি খনন করে নদীর বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। জমি থেকে মাটি নেওয়ায় ৬ থেকে ১০ ফুট গর্ত তৈরি হয়ে যাচ্ছে।
ওই সব জমিতে ফসল কিংবা বাগদা চিংড়ি উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়েছে। হতদরিদ্র জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস্ত করলেও কোন অগ্রগতি নেই।
ক্ষতিপূরণের দাবিতে শনিবার (২৬ এপ্রিল) কয়রা প্রেসক্লাবে দক্ষিণ বেদকাশির চরামুখা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তরা সংবাদ সম্মেলন করেন।
এ সময় ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষে চরামুখা গ্রামের কর্ণধর মন্ডল লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, খুলনার সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় জনপদ দক্ষিণ বেদকাশীতে আমাদের বসবাস।
আমাদের এলাকাটি অতি দূর্যোগপ্রবণ এলাকা হওয়ায় সরকার কর্তৃক টেকসই ভেড়িবাধের জন্য পূর্নবাসন প্রকল্পের অনুমোদন হয়।
যাহার ফলে বাপাউবো সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-০২ এর অধীনে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘আমিন এন্ড কোং’ উক্ত ইউনিয়নের মেদেরচর হইতে পদ্মপুকুর স্লুইচ গেট অভিমুখে
এবং চরামুখা খেয়াঘাট সংলগ্ন তপন বাবুর বাড়ী হইতে খালেরগোড়া অভিমুখে বাচ্চু সাহেবের ঘের পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের কাজ করে। যাহার প্যাকেজ নং ০১।
রাস্তাটি সংস্কারের সময় প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাস্তার বহিরাংশে খাস জায়গা থাকা স্বত্বেও ভিতরের অংশে আমাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করে। ফলে আমাদের অনেক জমি রাস্তার নিচে চলে যায়।
এছাড়া রাস্তা সংসারের জন্য যে মাটির প্রয়োজন হয় তার সম্পূর্ণ মাটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রকৌশলী মিঃ লিয়াকত আলীর পূর্ণ সহযোগিতায় ‘আমিন এন্ড কোং’
এর লোকজন প্রভাব খাটিয়ে জোর পূর্বক আমাদের কৃষি জমি থেকে এক্সেভেটর দ্বারা মাটি কর্তন করে আমাদের কৃষি জমি ফসল উৎপাদনের সম্পূর্ণ অনুপযোগী করে দেয়।
তখন আমরা জমির মালিকগন বাঁধা দিতে গেলে ‘আমিন এন্ড কোং’ এর ম্যানেজারসহ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আরও অনেকে আমাদের সহিত চরমভাবে দূর্ব্যবহার করে ।
পরবর্তীতে গত ফেব্রুয়ারি (বাপাউবো) পওর বিভাগ সাতক্ষীরা-০২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এবং কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ করি। এছাড়া এলাকায় মানববন্ধন করি। যে রিপোর্ট বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এবং ইলেকট্রিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়।
পরবর্তীতে (বাপাউবো) পওর বিভাগ সাতক্ষীরা-০২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আশিকুর রহমান সরেজমিনে তদন্ত করে আমাদের জমির মালিকগনের ক্ষতিগ্রন্থ জমির পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত করেন এবং আমাদেরকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।
কিন্তু অদ্যবধি উনি আমাদের ক্ষতিপূরণের কোন ব্যবস্থা না করে বিভিন্ন টালবাহানা করছেন। এব্যাপারে সাতক্ষীরা পওর বিভাগ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাখাওয়াত হোসেন এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কোন সদোত্তর দেন নাই।
ফলে আমাদের ধারনা পানি উন্নয়ন বোর্ড, সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-০২ এর একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘আমিন এন্ড কোং’ আমাদের জমি থেকে জোর পূর্বক মাটি কেটে নিয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জমিগুলো ভরাট করে দেওয়ার জোর দাবি জানান তারা।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন
জমির মালিক বিল্লাল শেখ, পুলিন বিহারী, সিরাজুল সানা, মনিরুজ্জামান বাচ্চু, সুরাত সানা, গোপাল মন্ডল, সমাজকর্মী আসলাম চৌধুরী প্রমূখ।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?