নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার হিজড়া সর্দার অন্তরার উপর হামলা করেছে প্রতিপক্ষ কয়েকজন হিজরা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে উপজেলার কিছু হিজড়া তার উপর হামলা করলে অন্তরা বারহাট্টা থানায় গিয়ে আত্মরক্ষার করেন।
অন্তরা হিজড়ার দাবী জেলার লতা হিজড়া তাকে স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে বারহাট্রা উপজেলার সর্দারের দায়িত্ব দেন। তাকে নিয়মিত চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় প্রায় সময় তিনি তার অনুসারীদের দিয়ে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করেন।
অপরদিকে লতা হিজড়ার দাবী তাকে দাওয়াত দিয়ে অন্তরা হিজড়া বাড়িতে নিয়ে জিম্মি করে স্ট্যাম্পে লিখিত রাখে।
অন্তরা উপজেলা দশাল গ্রামের জাফর আলী ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অন্তরা হিজরা বারহাট্টা উপজেলার সর্দার। গত ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নেত্রকোনা জেলার সর্দার লতা হিজড়া ৩০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পে লিখে দায়িত্ব দেন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার নৈহাটি বাজারে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন অন্তরা।
ইজিবাইক যোগে অন্তরা হিজড়া থানার কাছে পৌঁছা মাত্রই প্রতিপক্ষ হিজড়ারা তার ওপর হামলা করে। এ সময় অন্তরা হিজড়া থানায় গিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
তার শিষ্যদের দাবী অন্তরা ওরফে নয়ন মিয়া সে হিজরা না। তার বৌ বাচ্চা আছে। তার একটা ছেলে কলেজে পড়ে। সে কিভাবে হিজরাদের সর্দার হয়। আমরা তাকে সর্দার মানি না।
হামলাকারী হিজরা আঙ্গুর মিয়া ওরফে আংগুরী বলেন, আমি কয়েকদিন আগে ইন্ডিয়া গিয়েছিলাম। সে পুলিশ নিয়ে আমার বাড়িতে গিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা
ও তিন আনা ওজনের দুটি কানের দুল নিয়ে এসেছে। সে আমাদের ঠকিয়ে গাড়ি বাড়ি করেছে। আমরা এর বিচার চাই। এই সময় অন্য হিজরারাও নয়ন মিয়ার বিচার দাবী করে।
নয়ন মিয়া ওরফে অন্তরা হিজরা বলে, আমাকে জেলা সর্দার লতা নায়েকের অনুসারীরা মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমি থানায় এসে আশ্রয় নিয়েছি। এরা কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি জেলা থেকে বারহাট্টার দায়িত্ব পেয়েছি।
লতা নায়েক আমাকে বারহাট্টা এরিয়া দলিল করে দিয়ে দিয়েছে। আমি ছেলে ছিলাম লতা নায়েক আমাকে হিজড়া বানিয়ে আমার জীবন টা শেষ করেছে। এরপর আমার চলার জন্য তিনি আমাকে বারহাট্টার দায়িত্ব লিখে দিয়েছে।
কিন্তু আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার কথা বলে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় প্রায় সময় আমার অনুসারীদেরকে ধরে নিয়ে যায় এবং মুক্তিপণ আদায় করে। গত কিছুদিন আগেও আমার তিনজন অনুসারীকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে তাদেরকে ছাড়ে।
নেত্রকোনা জেলার হিজড়া সর্দার লতা বলেন, বারহাট্টায় অন্তরা নামে কোন হিজড়া নেই। যে হিজড়া দাবী করছে সে আসলে হিজড়া না। আমাকে দাওয়াত দিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে ব্ল্যাকমেল করে ট্রাম্পে লিখিত রাখে। আমি তাকে দায়িত্ব বারহাট্টা উপজেলায় কেন দায়িত্ব দিব। সে তো হিজড়া না।
অন্তরা হিজরার কাছে চান্দা দাবির বিষয়ে ও তার অনুসারীদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল হাসান জানান, তারা নিজেরা নিজেরা ঝগড়া করে এক পক্ষ থানায় এসে আশ্রয় নিয়েছে। অপর পক্ষটিকে আমরা থানায় প্রবেশ করতে দেইনি। আশ্রয় নেয়া পক্ষ টিকে নিরাপদে তাদের এলাকায় পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করছি।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?