চীনা সরকারের উপহার হিসেবে ঘোষিত ১০০০ শয্যার অত্যাধুনিক হাসপাতালটি নীলফামারী সদরে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলার সর্বস্তরের ছাত্র জনতা।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে ঘন্টাব্যপি ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ গ্রহন করেন।
এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নীলফামারী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আল মাসুদ চৌধুরী, জেলা জামায়তের নায়েবে আমির ড. খায়রুল আনাম, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি ও জেলা জামায়তের এসিস্টেন্ড সেক্রেটারী এ্যাডভোকে আল ফারুক আব্দুল লতিফ, শহর শাখার সেক্রেটারী এ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান আজাদ
কর্ম পরিসদ সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পায়েলুজ্জামান রক্সি, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব অলিউর রহমান হেলাল, নাগরিক কমিটির অন্যতম প্রতিনিধি আকতারুজ্জামান খান প্রমুখ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় কতৃক নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরের মাঝামাঝি অঞ্চলের সম্ভব্য স্থান বিবেচনায় রয়েছে। বক্তরা বলেন, নীলফামারী সদরে দারোয়ানী সুতাকল এলাকায় ৫৩ একর সরকারী খাস জমি রয়েছে। জায়গাটি দির্ঘদিন ধরে পড়ে আছে, সরকারের কাজে আসছে না। তাই এখানে ১০০০ শয্যার হাসপাতালটি স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে ড, খায়রুল আনাম বলেন, জেলা শহরের অদূরে দারোয়ানী সুতাকল (টেক্সটাইল মিল) নামক স্থানে প্রায় ৫৩ একর জমি খাস রয়েছে। এই জমিতে হাসপাতালের পাশাপাশি নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ, রিসার্চ সেন্টার, হেলিপ্যাড ও অ্যাম্বুলেন্স লেন স্থাপন করা সম্ভব। জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন না হওয়ায় এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকেও জেলা সদর অত্যন্ত সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। এখানে রয়েছে রেলওয়ে স্টেশন, সৈয়দপুর বিমান বন্দর, উত্তরা ইপিজেড, রেলওয়ে কারখানা ও চিলাহাটি স্থল বন্দর। এছাড়াও বাংলাদেশ ভারত, ভূটান, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল ও মালদ্বীপ যাতায়তে ব্যাপক সুবিধা রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারাও অতি সহজে চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
নীলফামারী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আল মাসুদ চৌধুরী সদরে টেক্সটাইলমিলের কাছে হাসপাতাল নির্মাণের সম্ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, এ অঞ্চলের মানুষ বহুদিন ধরে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
জটিল রোগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে কার্ডিওলজি (হৃদ রোগ) রোগে রংপুর বা ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করানো অধিকাংশ মানুষের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। রংপুর কিম্বা ঢাকায় যাওয়ার পথে এধরণের রোগির অকাল মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে চীন সরকারের দেওয়া ১০০০ শয্যার হাসপাতালটি নীলফামারী জেলার মানুষের জন্য আশার আলো ছড়াচ্ছে।
এ্যাডভোকে আল ফারুক আব্দুল লতিফ বলেন, নীলফামারী, ঠাঁকুরগাউ, লালমনিরহাট, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামের সংযোগস্থল হওয়ায় এ এলাকায় একটি হাসপাতাল স্থাপিত হলে পাঁচ জেলার লাখ লাখ মানুষের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেয়া সম্ভব হবে। ফলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা গ্রহণে তুলনামূলকভাবে কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে, যা সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা পেতে সহজ হবে।
মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক সমাজ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একযোগে এ হাসপাতালটি নীলফামারীতে স্থাপনের জোড় দাবি জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, জেলার ভৌগোলিক অবস্থান ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার নিকটবর্তী হওয়ায় এখানে হাসপাতালটি স্থাপন করা হলে শুধু নীলফামারী নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভূটান, বার্মা ও মালদ্বীপসহ অন্যান্য দেশের মানুষও সহজে উন্নত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ পাবেন।

দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?