সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতি বেগম (১২)কে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জেলা। বুধবার রাতের এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে স্থানীয়রা। গ্রেফতার আসামি বেলাল হোসেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনায় বিচার দাবিতে জেলার ৬টি স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জান্নাতি বেগম কালীগঞ্জের চর ভোটমারী গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে এবং ভোটমারী এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বুধবার সন্ধ্যায় জান্নাতির মা তার অসুস্থ নানিকে দেখতে গেলে বাড়িতে একা থাকেন মেয়ে। ফেরার পর মেয়েকে না পেয়ে খোঁজার এক পর্যায়ে স্থানীয় একটি ভুট্টা খেতে তার মরদেহ আবিষ্কৃত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায়, জান্নাতির হাত-পা বাঁধা ছিল, মুখ ও গলায় মাটি ভরা। হাত-পায়ে ফ্র্যাকচারসহ শরীরে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনা নিশ্চিত করেছে।
জান্নাতির বাবা ফজলুল হক বেলাল হোসেনসহ ৪-৫ অজ্ঞাতজনের নামে হত্যার মামলা করেন। পুলিশ বেলালকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম মালিক জানান, ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়া গেলেও পারিবারিক দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে হত্যার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। জান্নাতির ভাইয়ের সঙ্গে বেলালের ভাইয়ের পূর্ববর্তী কলহের বিষয়টি তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে।
ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার লালমনিরহাট টেকনিক্যাল কলেজ গেট, ভোটমারী স্কুল প্রাঙ্গণ, থানা ঘেরাওসহ ৬টি স্থানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয়দের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বেলালের বাড়িতে আগুন দিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা বিচারের দাবিতে স্লোগান তোলে। ভোটমারী বাজারে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জান্নাতির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বেলালের জবানবন্দি থেকে অন্যান্য সন্দেহভাজনকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহের ফরেনসিক প্রতিবেদন ও গভীর তদন্তের মাধ্যমে হত্যার রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে তারা। এদিকে, স্থানীয় জনগণ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দাবি করে আন্দোলন জারি রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয়কে ধরে এনেছে গ্রামবাসী। এব্যাপারে আপনার মতামত কি?
