মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মেহেরপুরে স্ত্রী রওশনারা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামী তসীমউদ্দীনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এ রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত তসীমউদ্দীন সদর উপজেলার চাঁদবিল গ্রামের দেলু শেখের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে স্ত্রী রওশনারা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তাকে আত্মহত্যার রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন তসীমউদ্দীন। তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাঁশের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন লাশ। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর ১১/১৭)। তবে ময়নাতদন্তে রওশনারা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ থাকায় মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। পরে নিহতের ছেলে রাজন ২০১৭ সালের ৮ জুন তার বাবার দায়ের করা মামলা বাতিল করে একটি নতুন এজাহার দাখিল করেন, যা পরে মামলা নম্বর ১২/১৭ ও সেশন মামলা নম্বর ২৮২/২০১৯ হিসেবে আদালতে ওঠে।
তদন্ত শেষে তৎকালীন এসআই খন্দকার রবিউল ইসলাম এবং পরবর্তীতে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তদন্তে উঠে আসে, ঘটনার দিন ওষুধ সেবন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে রওশনারা খাতুনের মৃত্যু ঘটে। পরে তসীমউদ্দীন সেটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজান। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
মামলার ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় তসীমউদ্দীনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। এছাড়া দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় আরও ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ২ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পিপি সাইদুর রাজ্জাক এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আসাদুল আজম খোকন আইনি লড়াইয়ে অংশ নেন।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?