সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও যুবলীগ নেতা এটিএম মুসা শামীমের বিরুদ্ধে সমিতির তহবিল থেকে ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ দলিল লেখকরা তার বিরুদ্ধে সাব রেজিস্টার অফিসে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে শামীমের বিরুদ্ধে দলিল প্রতি বেআইনি চাঁদা আদায়, সদস্যদের ওপর শারীরিক নির্যাতন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে।
দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের বক্তব্য অনুযায়ী, যুবলীগ নেতা মুসা শামীম সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে সমিতির সভাপতি পদে বহাল আছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি প্রতিটি দলিলের বিপরীতে ২০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করতেন।
এছাড়া সমিতির সদস্যদের মাসিক সঞ্চয় থেকে জমা হওয়া ১৮ লাখ টাকার মধ্যে ২০২৪ সালের দুই ঈদে ৭ লাখ টাকা বিতরণ করা হলেও বাকি ১১ লাখ টাকা শামীম আত্মসাৎ করেছেন বলে দাবি করা হয়।
সমিতির সদস্য আব্দুল মতিন বলেন, “শামীমের বিরুদ্ধে আগে কোনো কথা বলার সাহস হতো না। ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।”
অন্যদিকে দলিল লেখক জিনাত হোসেন নোবেল অভিযোগ করেন, “প্রতিটি দলিলে ২০০ টাকা না দিলে দলিল আটকানো বা সমিতির ঘরে আটকে রেখে মারধর করা হতো।”
দলিল লেখক তৈয়ুবুর রহমান রাকু আরও যোগ করেন, “শামীম দলীয় ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ভুয়া দাতা তৈরি করে অবৈধ দলিল সম্পাদন করতেন তিনি।”
অভিযোগের জবাবে এটিএম মুসা শামীম দাবি করেন, “সমিতির নির্বাচনে হেরে যাওয়া একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তৈরি করেছে। সমিতির টাকা উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় হয়েছে। সদস্যদের সম্মতিতেই সব কাজ করা হয়েছে।”
তুষভান্ডার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্টার আরিফ ইস্তিয়াক জানান, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছর ধরে শামীমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জাল দলিল তৈরি ও সমিতির তহবিল লোপাটের অভিযোগ বারবার উঠলেও ক্ষমতার প্রভাবে তা আড়ালে থেকে যায়।
আওয়ামী লীগের পতন-পরবর্তী সময়ে সাধারণ সদস্যরা সাহস করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার অভিযোগের তদন্ত ও টাকা উদ্ধারের দাবিতে দলিল লেখক সমিতির সদস্যরা সক্রিয় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?