মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃ
মেহেরপুর- কুষ্টিয়া ফোরলেন সড়কের গাংনী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নির্মান কাজ বন্ধ রয়েছে প্রায় ৬ মাস। সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সেটি এখন জনগনের নানা দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের পাশে জেলা পরিষদের জায়গায় একটি দোকানঘর উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সড়ক বিভাগ ও জেলা পরিষদের মধ্যে চলছে ঠাণ্ডা লড়াই। ফলে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। যার ফল ভোগ করছেন সাধারন জনগন। তবে সরকারের এ দুটি বিভাগ তাদের দায় নিতে চাইছেন না।
জানা গেছে, মেহেরপুর কুষ্টিয়া সড়কের গাংনী বাসস্ট্যান্ডে একনেক এর নকশা অনুযায়ী সড়কটি নির্মান কাজ সম্পন্ন করতে প্রথমে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তৎকালিন মেসার্স মালেক ষ্টোর। তিনি জেলা পরিষদ থেকে লীজ নিয়ে দোকান নির্মান করেন। ঐ জায়গা দখলে রাখতে সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তাদের নামে মামলা করে যা পরে ভ্যাকেট করে আদালত। একই সাথে সেটি উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু মালেক স্টোরের পাশেই আরেকটি দোকান উচ্ছেদ করেনি জেলা পরিষদ। ফলে বাস-বেসহ ক্রসিং রোড নির্মাণে জটিলতা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন সড়ক নির্মান কাজ বন্ধ হওয়ায় জন দূর্ভোগ যেমন বেড়েছে তেমন সড়কের ঐ জায়গা অবৈধ দখলের চেষ্টাও চলছে।
গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় ওই জায়গায় দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হামলা মামলার ঘটনাও ঘটে। অবৈধ দখলদার হঠাতে মিছিল সমাবেশও হয়েছে। প্রতিবাদে জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরে ফোর লেন রাস্তাা নির্মান হচ্ছে অথচ গাংনী বাজার বাসস্ট্যান্ড মোড়ে একনেক এর নকশা অনুযায়ি কাজটি বাস্তবায়ন করতে অনেক কালক্ষেপন করেছে। জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে মসজিদের অজুখানা উচ্ছেদ করা হয়েছে বিনা নোটিশে। মালেক স্টোরকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। অথচ কোন অদৃশ্য শক্তি বলে সড়ক বিভাগ ও জেলা পরিষদ সড়ক সংস্কারে বাধা হচ্ছে এমন স্থাপনা উচ্ছেদ করছেন না ? গেল ৬ মাস অতিবাহিত হলেও কোন সুরাহা হয়নি বরং স্থানীয়দের মাঝে আরো ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। সমাবেশে বক্তারা গাংনী বাজারের বর্তমান পরিস্থিতির অবনতির জন্য জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজকে দায়ী করেছেন।
রাস্তাা নির্মানে বিলম্বের কারণ সম্পর্কে সড়ক জনপথের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, জেলা পরিষদকে বারবার তাদের জায়গার সিমানা নির্ধারন করার অনুরোধ করা হলে তারা একটি চিঠি ইস্যু করে। এবং যেদিন জমি জরিপের দিন ধার্য্য করা হয় ঠিক তার আগে দিন বিকেলে আরেকটি স্মারক চিঠির মাধ্যমে তা বাতিল করা হয়। তাতে কারণ দেখানো হয়, আলোচিত জমির কাগজ পত্র আরো যাচাই বাছাই করে পরবর্তিতে জমির জরিপ করা হবে। সে জরিপ এ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। এদিকে সড়ক উন্নয়নের কাজ স্থগিত রয়েছে। যার ফলে সরকারি ফাঁকা জায়গা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকজন অবৈধ দখল করার চেষ্টা করছে যার ফলে দাঙ্গা হাঙ্গামার সৃষ্টি হচ্ছে ও আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। সাথে সাথে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ জানান, আলোচিত ঐ জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদ ইজারা দিয়ে আসছে। ঐ জায়গা প্রয়োজন হলে সড়ক জনপথ কর্তৃপক্ষ আবেদন করতে পারে। অথচ তারা আবেদন করেন নাই। এর আগে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মালেক স্টোর উচ্ছেদ করা হয়েছে। এদিকে সড়ক জনপথের উপসহকারি প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের দাবি, আলোচিত ঐ জায়গাটি সড়ক ও জনপথের। গত ১২ মার্চ বুধবার সড়ক ও জনপথের নির্বাহি প্রকৌশলী (অঃদাঃ) মুহাম্মদ মনজুরুল করিম স্বাক্ষরিত একটি স্মারক চিঠিতে আলোচিত ঐ জায়গায় জটিলতা নিরসনে উপযুক্ত যৌথ প্রতিনিধি প্রেরণের আহবান করা হলেও জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।
এদিকে ঐ জায়গাটি অবৈধ দখল ও সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজকে দায়ী করলেও তিনি কোন মন্তব্য করেন নি।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?