আক্কাছ আলী (মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি)
মুন্সিগঞ্জ টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল বানারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান দেওয়ান এর বিরুদ্ধে নদীর ঘাটের খাস কালেকশনের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ব্যাস্ততম হাসাইল খেয়া ঘাটটি ডাক না নিয়ে খাস কালেকশনের নামে দির্ঘদিন যাবৎ ওই ঘাট দিয়ে পারাপার হওয়া মালামাল ও যাত্রীবাহী ট্রলার হতে আদায় করছেন বিপুল পরিমান চাদাঁ।
এ মৌসুমে ওই ঘাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা আলু হাসাইল ও পাশের শরিয়তপুর জেলার চরাঞ্চল হতে হাসাইল ঘাট দিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্রি ও বিভিন্ন হিমাগারে সংরক্ষন করা হয়ে থাকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে বিগত প্রায় ১৫ দিন ধরে ও ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার বস্তা আলু পারাপার হচ্ছে। আর ওই ঘাট দিয়ে আলু পার করতে কৃষকদের কাছ হতে আদায় করা হচ্ছে প্রতিবস্তা ১২ টাকা করে। এতে দৈনিক ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা কালেকশন হয়ে থাকে। এই টাকা স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান দেওয়ান এর লোকজন উত্তোলন করে থাকে।
যেখানে প্রতিদিন ৬০-৮০ হাজার টাকা কালেকশন হচ্ছে সেখানে মাসে মাত্র ২০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ আত্নসাৎ করছে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। যার কারনে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
সোমবার (১৭মার্চ) সকাল ১০ টায় সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসাইল ঘাটে ১০-১৫ হাজার বস্তা আলু নিয়ে ২০-৩০টি আলু বোজাই ট্রলার ঘাটে নোঙর করে রেখেছে স্থানীয় ট্রলার চালকরা। নোঙর করে রাখা ট্রলার থেকে লেবার দিয়ে ট্রলিতে আলুগুলো তোলা হচ্ছে। এক বস্তা আলু তোলতে ১২ টাকা করে নিচ্ছেন স্থানীয় পারভেজ শেখ নামের এক ব্যাক্তি। এ সময় তার কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান দেওয়ান এর থেকে ইজারা নিয়েই টাকা কালেকশন করছি।
বস্তা প্রতি ১২ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন আমরা বস্তা প্রতি ১০ টাকা নেই। এ টাকা থেকে লেবারদের ৭ টাকা দিচ্ছি আর ৩ টাকা আমরা নিচ্ছি। তবে ওই ঘাটের কতিপয় লেবার বলেন আমাদের আলু তোলতে বস্তাপ্রতি ৬ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। ওই ঘাটের লেবার রবিউল জানান, আমরা প্রতিবস্তা আলু ট্রলার হতে তুলতে ৬ টাকা পাই।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান দেওয়ান বলেন, মূলত আমরা খাস কালেকশন করছি। আমরা লোক দিয়ে ঘাট থেকে বস্তা প্রতি ১০ টাকা করে নিয়ে ৬ টাকা লেবারদের দেই আর ৪ টাকা খরচ বাবদ রাখি। প্রতি মাসে খাস কালেকশন হিসেবে তহসিলদারকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে দেই। হাসাইল বানারী ইউনিয়নের তহসিলদার আব্দুল কাদের জানান, বস্তা প্রতি কত টাকা নেওয়া হচ্ছে তা আমি জানিনা।
তবে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমার কাছে জমা দেয়। পরবর্তীতে আমি সেই টাকা রাজস্ব খাতে জমা করি। তিনি আরো জানান, আমি চেয়ারম্যানকে ডাকের মাধ্যমে ঘাট নেওয়ার কথা বলেছি কিন্তু তারা তা না করে খাস কালেকশন করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এধরণের কোনো ঘটনা ঘটলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?