বরিশালে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত সুজন (২৪) গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জিয়ানগর এলাকায় স্থানীয়দের রোষের শিকার হন তিনি। পরে আহত অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই হামিদুল ইসলাম গণপিটুনিতে সুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত সুজন জিয়ানগর এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন এবং পেশায় অটোরিকশা চালক ছিলেন।
শুক্রবার দুপুরে পাশের বাসার চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিশুর মা কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করলে অভিযুক্ত সুজন আত্মগোপনে চলে যায়।
শনিবার সন্ধ্যায় এলাকায় উপস্থিত হলে ক্ষুব্ধ জনতা তাকে চিহ্নিত করে এবং গণপিটুনি দেয়। আহত অবস্থায় পুলিশ সুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়, তবে শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, ধর্ষণের শিকার শিশুটি বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে তৎপর ছিল তারা। তবে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে অপরাধীকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনা উচিত বলে মত দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
গণপিটুনির ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং এই ধরনের বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড এড়াতে স্থানীয়দের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের বিচার দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে হওয়া উচিত এবং গণপিটুনির মতো নৃশংস ঘটনা সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করে।
বরিশাল জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ জনসাধারণকে অনুরোধ করেছে যে, কোনো ধরনের অপরাধের অভিযোগ উঠলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হোক এবং অপরাধীকে আইনিভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে দেওয়া হোক।