বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির হাতে আটক হওয়া ২৬ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনা হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পর শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জেটি ঘাট দিয়ে তারা দেশে ফিরে আসে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং আরাকান আর্মির মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলা আলোচনার পর এই প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজিবি জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন সময়ে টেকনাফের কে কে খাল ও শাহপরীর দ্বীপ ট্রলারঘাট থেকে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন এসব জেলে। তারা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে ধরতে ভুলবশত বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমারের জলসীমায় প্রবেশ করেন। এরপর আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদেরকে আটক করে নিয়ে যায় এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিভিন্ন স্থানে আটকে রাখে।
জেলেদের পরিবার তাদের মুক্তির জন্য বিজিবির কাছে সহায়তা চাইলে বিজিবি দ্রুত কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে। টানা আলোচনা ও মধ্যস্থতার পর আজ বিকেলে তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত আনা সম্ভব হয়। বিজিবি আরও জানায়, আটক জেলেদের সঙ্গে তাদের ব্যবহৃত একটি মাছ ধরার নৌকাও ফেরত দেওয়া হয়েছে, যা আরাকান আর্মি বাজেয়াপ্ত করেছিল।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার জলসীমায় প্রায়ই এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের জলসীমায় সীমানা চিহ্নিত না থাকায় এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আধিপত্য থাকায় বাংলাদেশি জেলেদের জন্য ঝুঁকি থেকেই যায়। বিজিবি আশ্বাস দিয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে তারা আরও কঠোর নজরদারি বাড়াবে এবং বাংলাদেশি জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করবে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী জেলেদের আরও সতর্কভাবে সমুদ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং মিয়ানমারের জলসীমার বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে। বিজিবি জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত মনিটরিং বাড়ানো হবে এবং মৎস্যজীবীদের নিরাপদভাবে মাছ ধরার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।