মোঃ হাসনাইন আহমেদ, ভোলা
দেশব্যাপী নারী অপহরণ ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ভোলায় সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অদ্য ১৫ মার্চ ২০২৫ শনিবার সকাল ১০টায় ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।
উক্ত কর্মসূচিতে উপস্তিত ছিলেন পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি নেওয়াজ শরিফ , প্রচার সম্পাদক আবু নাঈম, অর্থ বিষয়ক সম্পদিকা উম্মে হাফসা, দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক মোঃ নাসিম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আমেনা বেগম, কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ হোসেন এবং মোসাঃ লিয়া, মেহেদী হাসান মাহি,মোঃ রাফি বিন সিরাজ সহ প্রমুখ উক্ত সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী ও মানবাধিকারকর্মীরা অংশ নেন।
সংগঠনের সভাপতি নেওয়াজ শরিফ বলেন, দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্থানে নারী অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় না। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি ধর্ষকদের আরও সাহসী করে তুলছে। বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বন্ধ করতে হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেবল আইন প্রয়োগই যথেষ্ট নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা সৃষ্টি করাও জরুরি। পরিবারের শিক্ষা, সামাজিক মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় অনুশাসনের চর্চা নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি, ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে গণমাধ্যম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
আয়োজক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, শুধু আন্দোলন করলেই হবে না, সমাজের প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে এবং বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত হয় ও দণ্ড দ্রুত কার্যকর করা হয়—সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আমরা জোরালো দাবি জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের নির্যাতনের শিকার না হতে হয়, নির্যাতন কমে আসে এবং নারী ও কন্যাশিশু সুস্থ ও নিরাপদ ভ্রমণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী বক্তারা আরো বলেন, বিচারহীনতার কারণে অপরাধীরা বারবার একই কাজ করার সাহস পায়। যদি প্রতিটি ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হতো, তাহলে আর কেউ গৃহশ্রমিকদের নির্যাতনের সাহস দেখাত না।
মানববন্ধনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
নারী নির্যাতন বন্ধে শুধু আইন প্রণয়ন যথেষ্ট নয়, বরং আইন প্রয়োগের কার্যকারিতা নিশ্চিত করাও জরুরি। পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষার চর্চা বাড়ানোই হতে পারে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।