সেলিম রেজা, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় আলু চাষে ভালো ফলন হলেও চোখে মুখে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আলু চাষিদের। শুরুতে আলু চাষে বাড়তি খরচ হওয়ায় প্রতি বছরের চেয়ে এবার বিঘাপ্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। খরচের তুলনায় দাম অনেকটা কম হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে আলু চাষিরা।
গত বছর আলুর দাম বেশি হওয়ায় এবার কৃষকরা লাভের আশায় বেশি করে আলু চাষ করেছিল। ফলন ভালো হলেও লসের হিসাব গুনছে আলু চাষিরা।
শেরপুর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৭শ ৬৫ হেক্টর। লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে এবার বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় মালিহাটা, বোডেরহাটের, আয়রা, উচড়ং, কেল্লার কৃষকদের সঙ্গে, তারা জানান, গত বছর আলুতে লাভ বেশি হওয়ায় আলুচাষি বেড়ে গেছে।
যার ফলে শুরুতে আলুর বীজ সংকট হওয়াতে বেশি দামে বীজ ক্রয় করে চাষ করা হয়েছে। আলুর জমিতে ভাইরাসের তেমন প্রাদুর্ভাব ছিল না, ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু দাম না থাকায় গুনতে হচ্ছে লোকসান।
আলু চাষি মোতালেব হোসেন জানান, ৪০ বিঘা আলুর জমি চাষ করেছি। এবার প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৬৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। কিছু জমি থেকে আলু তোলা শুরু করেছি। প্রতি বিঘাতে ১০ মন থেকে ১২০ মণ আলুর উৎপাদন হচ্ছে। দাম কম হওয়ায় বিক্রয় না করে কোল্ড স্টোরেজে রাখা হচ্ছে।
তবে এবার লাভের চেয়ে লোকশান গুনতে হচ্ছে আমাদের। আলুচাষি শামিম ও শাফি জানান, আমরা দুজনেই ২শ বিঘার বেশি জমি চাষ করেছি। ঢাকায় বিক্রয়ের জন্য অগ্রিম আলুর চাষ করেছিলাম। সেগুলো বিক্রয় করা হয়েছে প্রতি বিঘায় গড়ে ১৭ হাজার টাকা করে লস হয়েছে।
সেই সময় বাজারে বিক্রয় করছি ১২ টাকা দরে প্রতি কেজি। আলুচাষি কামাল হোসেন জানান, আমি ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি।
লেট ব্রাইট ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়াতে ঘন ঘন কীটনাশক দেয়া হয়েছে এতে খরচ বেশি হয়েছে। তাছাড়ও বীজ, সার, দেবার সব মিলিয়ে নিজের জমি বিঘাপ্রতি ৫০ হাজার টাকার খরচ হয়েছে। তারপর বর্তমানে লস গুনতে হচ্ছে।
শেরপুর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জিএম মাসুদ জানান, এ ব্যাপারে কৃষকদের সচেতন করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার বলেন, কৃষকরা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হন সে জন্য সবসময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এখনও আলু তোলা সম্পূর্ণ শুরু হয়নি।
বর্তমানে আলুর বাজার কম হলেও আলু তোলা পুরো দমে শুরু হলে কোল্ড স্টোরেজ ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাবে সে ক্ষেত্রে দাম বাড়তে পারে।