মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃ
মেহেরপুরে প্রশাসনিক অভিযানে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ইটভাটা। গত দেড় মাসে এ জেলায় ৩০ টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া ছাড়াও মোটা অংকের জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ইটভাটা বন্ধ হওয়ায় মালিক শ্রমিক আন্দোলন ও স্মারকলিপি প্রদান করলেও প্রশাসনিক অভিযান চলমান। তবে ভাটা বন্ধ হওয়ায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে ভোক্তাদের উপর। এখন চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে ইট। প্রশাসন বলছে, অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে জেলায় ১০২ টি ইটভাটা রয়েছে। যার একটিরও কোন অনুমোদন নেই। নেয়া হয়নি পরিবেশের ছাড়পত্র। ফলে প্রশাসনিক অভিযান চালানো হচ্ছে এসব ইটভাটায়। গত দেড় মাসে ২১ টি ভঅটা বন্ধ করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। সর্ব শেষ গত তিন দিনে দুটি অভিযানে ৬টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। জরিমানা করা হয় ৯ লাখ টাকা।
অভিযানে ০৮ মার্চ বিকেলে উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত নিউ স্টার ইটভাটা থেকে দুই লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ১০ মার্চ অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনার অপরাধে ৪ টি ইটভাটা থেকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাঁশবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত আশরাফুল ব্রিকসের হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে এক লাখ টাকা।
ফাইভ স্টার ব্রিকস থেকে দুই লাখ টাকা, দোয়েল ব্রিকসের রুহুল আমিন দুই লাখ টাকা এবং পান্না ব্রিকসের গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা আদায় করা হয়। একই সাথে অবৈধ ইটভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। অনেক ইটভাটায় পানি দিয়ে চিমনী ও ইট নষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
ইটভাটা মালিকদের দাবি, ইটভাটা চালুর মৌসূমে তাদের বিনিয়োগ হয়েছে কোটি কোটি টাকা। আর এর সাথে লাখ লাখ শ্রমিকের রুটি রুজির প্রশ্ন রয়েছে। তাই চলতি মৌসূম পর্যন্ত ব্যবসার করার সুযোগ দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সারা দেশের ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
তাদের দাবি, ইটভাটার মৌসূমের মাঝপথে এসে এ ধরনের অভিযান কোটি মানুষকে বেকার করবে, যা দেশের বিভিন্ন খাতে এক বিরুপ প্রভাব পড়বে, তাই যেকোনভাবেই তারা চলতি মৌসূমের শেষ পর্যন্ত ইটভাটা চালানোর অনুমতি চাইছেন। ইটভাটা মালিকদের এমন দাবির মধ্যেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জানান, মাস দুয়েক আগেও প্রতি হাজার ইট বিক্রি হতো ৭ হাজার টাকায়। এখন ইটভাটা বন্ধ ও প্রশাসনিক অভিযানের কারনে প্রতিহাজার ইট বিক্রি হচ্ছে ৯ হাজার টাকায়। দুনম্বর ইট হাজার প্রতি বেড়েছে দেড় হাজার টাকা। এমনকি নিম্ন মানে ইটের দামও আকাশ চুম্বী। আগামীতে প্রতি হাজার ইটের দাম ১০ থেকে ১১ হাজার টাকায় দাড়াবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, সরকারের আদেশে ভাটাগুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে। স্থানয়ি প্রশাসনের কোন সিদ্ধান্ত নয়, এটা সেন্ট্রালি। সরকারী সিদ্ধান্ত সকলেরই মেনে চলা উচিৎ।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?