নূরুল আলম কামাল, নেত্রকোনা :
নেত্রকোনার মদনে কাবিটা প্রকল্পের কাজে নয় ছয় করে পিআইও অফিসের অফিস সহকারি রাসেলের যোগসাজসে প্রকল্প সভাপতি আবুল কালামের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে উঠেছে। এই নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ।
শুরু হয়েছে সুশীল সমাজের মধ্যে কানাঘুষা। বিরাজ করছে উত্তেজনা। জনসাধারণের প্রশ্ন কিভাবে একই ব্যক্তি এক অর্থবছরে তিনটি প্রকল্পের সভাপতি হয়? স্থানীয়রা বলছেন উদ্দেশ্য ছিল প্রকল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ করা।
তবে প্রকল্প সভাপতির দাবি তিনি বাড়িতে থাকেন না। অন্য লোক দিয়ে কাজ করিয়েছেন। তার দাবি কাজ ঠিকঠাক হওয়ায় তিনি বিল পেয়েছেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় পর্যায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় উপজেলা তিয়শ্রী ইউনিয়নের একই জায়গায় ধুবাওয়ালা সিসি রাস্তা হতে হাওরে ইসলাম উদ্দিনের জমি, ছোটন মিয়া জমি হইতে সাইফুল ইসলামের জমি ও হান্নানের জমি হইতে কালামের জমি পর্যন্ত তিনটি প্রকল্প দেওয়া হয়।
এ তিনটি প্রকল্পে ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের সভাপতি আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি কে করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একই রাস্তায় ঘুরেফিরে তিনটি প্রকল্প করা হয়। এই তিন প্রকল্পে নয় লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে রাস্তা সংস্কার কাজ নামমাত্র মাটি কাটা হয়। তবে স্থানীয় লোকজন তিনটি প্রকল্পের ৯ লাখ টাকা বরাদ্দের বিষয়ে কিছুই জানেন না।
ধুবাওয়ালা গ্রামের শাহ আলম, আজহারুল ও মোতালেবসহ অনেকেই বলেন, এই রাস্তায় ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে তা আমরা এলাকাবাসী জানিনা। সব মিলাইয়া এক্সভেটর দিয়ে ৩০ ঘণ্টার মতো কাজ করা হয়েছে। যা গড়ে ৫০-৬০ হাজার টাকার ব্যায় হয়েছে।
এতো চুরি নয় যেন ডাকাতি হয়েছে। প্রকল্প কাজে যে বা যারা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিয়শ্রী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন শামীম বলেন, এই রাস্তা সংস্কার বাবদ ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ! এলাকাবাসী কেউই জানেনা। তিনটি প্রকল্প একটা রাস্তায় দেওয়া হয়েছে। কিছু মাটি ফেলেছে আমরা এলাকাবাসী দেখেছি।
তিনি আরও বলেন, রাস্তা একটা, জায়গাও অল্প, এর মধ্যেই ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ। এ যেন মগের মুল্লুক।
প্রকল্প সভাপতি আবুল কালামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নেত্রকোনায় থাকেন তিনি। অন্য লোক দিয়ে প্রকল্পের কাজ করিয়েছেন। তার দাবি কাজ ঠিকঠাক হওয়ায় তিনি বিল পেয়েছে।
মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্পের বরাদ্দের সময় তিনি ছিলেন না। বিষয়টা তার অফিসের অফিস সহকারী রাসেল ভাল জানেন।
প্রকল্প কাজে তার যোগসাজসে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্যালয়ের অফিস সহকারি রাসেল জানান, আমি অফিসের সামান্য একজন কর্মচারী। বিল দেওয়ার ক্ষমতা বা সাইন করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি এ বিষয়ে কিভাবে জানব?
প্রকল্প কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অহনার জিন্নাত জানান, আমি উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি এসব প্রকল্পে কাজ আগের ইউএনও’র সময় বাস্তবায়ন হয়েছে।