নাজমুল হক চৌধুরী, নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীর রায়পুরা থানার মূল ফটকের সামনে গ্যাং স্টাইলে কয়েকজন তরুনের বেপরোয়া আচরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল এসব ছবিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।
ছবিগুলোতে দেখা যায়, রাতে মূল ফটকে থাকা একটি মাইক্রোবাসে কয়েকজন তরুন বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি নিয়ে পোজ দিচ্ছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাইক্রোবাসের দরজা খুলে, কেউবা ছাঁদে দাঁড়িয়ে, আবার কেউ সামনে দাঁড়িয়ে উশৃংখল ধাঁচের ভঙ্গিতে পোজ দিচ্ছে।
এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ভাইরাল এসব ছবির পোস্টে কমেন্ট বক্সে নানা শ্রেনী পেশার মানুষ নানা ধরনের মন্তব্য করতে দেখা যায়। অনেকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন, রায়পুরা থানা কি কিশোর গ্যাংয়ের দখলে।
আবার কেউ মন্তব্য করছেন, পুলিশ কি তখন ঘোমাচ্ছিল, ওদের গ্রেফাতার করেনি কেন। অনেকে আবার মন্তব্য করেছেন, যেখানে থানা ই কিশোর গ্যাং এর দখলে, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়।
তবে আসল বিষয় উঠে আসে মরজাল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আরমান মিয়ার তথ্যে, ওনি জানান, রমজানের প্রথম দিন রোববার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় আইনি পরামর্শ নিতে থানায় যান। তার সঙ্গে ওই যুবকরাও থানার সীমানার ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর যখন আরমান মিয়া থানার ভেতরে প্রবেশ করেন তখন তারা বাহিরে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তোলেন।
ছবিতে ৭ জন যুবককে লক্ষ্য করা যায়। তাদের বয়স আনুমানিক ১৭ থেকে ২০ বছর হবে। তারা মাফিয়া ভঙ্গিমায় বিভিন্ন স্টাইলে ছবি তোলে তা টিকটকে আপলোড করে। পরে এটি নেটিজেনদের নজরে আসলে বিষয়টি নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম রমজানের দিন ইফতারের পরে আমি রায়পুরা থানাতে যাই একটি বিষয় নিয়ে। আমি থানাতে যাওয়া পর তারা ওই মাইক্রোবাস নিয়ে থানাতে আসে ফুটবল খেলার অতিথি করার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। আমি তখন তাদের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলি কিন্তু কোন সময় তারা এই অঙ্গভঙ্গি দিয়ে ছবি তুলেছে তা আমি দেখেনি এবং জানি না।
তারা এইসব ছবি তুলেছে টিকটকে দেওয়ার জন্য। এছাড়া ছেলেগুলো খুব ভালো, কেউ ব্যবসা করে, আবার কেউ ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত।
রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, বিষয়টি আমরাও আজকে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। ওইদিন মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আরমান মিয়া থানায় একটি আইনি কাজে এসেছিলেন।
ওনার কাছেই ছেলেগুলো এসেছে, পরে তাকে ডেকে এনে কথা বলার পর উনার মাধ্যমেই দু’একজনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা এগুলো টিকটকের জন্য করা হয়েছে বলে জানায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিজেরাও তদন্ত করছি। কিভাবে তুলল, এই সুযোগটাই কিভাবে পেলো। আমাদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখছি, প্রযুক্তির সকল টেকনোলজি ব্যবহার করে আমরা হার্ডলাইনে কাজ করছি। পরবর্তীতে যেন এই ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে।