খাগড়াছড়ির রামগড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে হাসান শরীফ (২৩) নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৈচালাপাড়া এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নজরদারিতে ছিলেন এবং তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ার পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত হাসান শরীফ তৈচালাপাড়া ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ফারুকের ছেলে। তিনি রামগড় কলেজ ছাত্রলীগের প্রথম বর্ষের সভাপতি ছিলেন।
রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে একটি মুলতবী জিআর মামলা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিধি মোতাবেক তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত হাসান শরীফ দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র রাজনীতির আড়ালে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার সময় তার নেতৃত্বেই একদল সশস্ত্র হামলাকারী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা এ গ্রেপ্তারকে স্বস্তিদায়ক বলে উল্লেখ করেছেন এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, হামলায় জড়িত অন্যদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।
অন্যদিকে, স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গ্রেপ্তার সরকার ও প্রশাসনের কঠোর অবস্থানেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে এটি বিচ্ছিন্ন কোনো পদক্ষেপ নাকি আরও বড় পরিসরে অভিযানের অংশ, সেটি দেখার বিষয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ আশঙ্কা করছেন যে মূল পরিকল্পনাকারীরা ধরা না পড়লে হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
এদিকে, ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতারা এই গ্রেপ্তারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দলের কিছু দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন, যদি হাসান শরীফ প্রকৃতপক্ষে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে সংগঠন তার দায় নেবে না এবং আইন অনুযায়ী যা হবার তাই হবে।
গ্রেপ্তারের পর এলাকার পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।