রাজধানীর নয়াপল্টনের জামান টাওয়ারে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের নিরলস প্রচেষ্টায় প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। বুধবার সকালে এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন।
তিনি জানান, “ঝুঁকি বিবেচনায় জামান টাওয়ারের আগুনে ১৪টি ইউনিট পাঠানো হয়েছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে ৯টি ইউনিট, বাকি ৫টি ইউনিট প্রস্তুত ছিল তবে তাদের কাজে লাগানোর প্রয়োজন হয়নি।”
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনটির চারতলা ও পাঁচতলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে হয়। তবে আশার কথা, ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত তৎপরতায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন আরও বলেন, “সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বর্তমানে ড্যাম্পিং ডাউনের কাজ চলছে।”
এর আগে বুধবার ভোর ৫টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের টিম। আগুন লাগার পর ভবনের ভেতরে আটকে পড়া দুজন পুরুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। আগুন লাগার সময় ভবনের ভেতরে আরও কেউ ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই আশপাশের ভবন থেকে বেরিয়ে আসেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই আগুনের শিখা উঁচু হয়ে ওঠে এবং চারপাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এতে ভবনের আশপাশে থাকা দোকান ও অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের লোকজনও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। তদন্তের মাধ্যমে সঠিক কারণ উদঘাটনে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “এ ধরনের বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটুকু কার্যকর ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে।” এই অগ্নিকাণ্ড ভবন মালিকদের আগুন-নিরাপত্তার বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আহ্বান জানায়।
উল্লেখ্য, ঢাকায় সম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকা, বাণিজ্যিক এলাকা এবং বহুতল ভবনগুলোতে অগ্নি-নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে বলে একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। জামান টাওয়ারে এই অগ্নিকাণ্ড আবারও বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার বিষয়টি সামনে এনেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরো ঘটনার তদন্ত শেষে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। আপাতত ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?