কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি :
প্রতিবছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—এ দুই মাস সুন্দরবনে কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এ সময় কাঁকড়া সুন্দরবনের নদী-খালে ডিম পাড়ে। সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। কাঁকড়ার প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতেই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাকড়া ধরার অপরাধে সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের বজবজা টহল ফাঁড়ির আওতাধীন মুড়ুলির খাল এলাকায় ১০ জেলেকে আটক করেছে বন বিভাগ। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে বন বিভাগের বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানের সময় আটককৃতদের কাছ থেকে চারটি নৌকা ও কাঁকড়া ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা মানছেন না কাঁকড়া আহরণকারী ও ব্যবসায়ীরা।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এই ২ মাস জুড়ে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, হংকং, চীনসহ বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আর এসব উৎসবের খাদ্য তালিকায় ডিমওয়ালা কাঁকড়ার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে পাইকগাছায় ডিমওয়ালা ১ হাজার ৪শ থেকে ১ হাজার ৮শ টাকা কেজি দরে মা-কাঁকড়া বিক্রি হচ্ছে।অধিক মুনাফা লাভের আশায় কিছু অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাকড়া ধরছে।এ সকল অসাধু জেলেদের ধরতে নিয়মিত অভিযসোমবার ভোররাতে বজবজ টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে বিশেষ টহল দল মুড়ুলির খাল এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে দাকোপ উপজেলার ১০ জন জেলেকে আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন—হানিফ শেখ, আশরাফুল গাজী, তাজনুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, জাহাতাব আলী, ইমরুল ইসলাম, আমির আলী, জামাল সরদার, কারিমুল ও আল-আমিন।খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. শরিফুল আলম জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরে তাদেরকে কয়রা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া ধরার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিকার করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সুন্দরবনকে অবৈধ শিকারমুক্ত রাখতে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।ানের অংশ হিসেবে করা হয়।