নাটোর প্রতিনিধিঃ
হাসপাতালে ভেতরে শুধু ধুলা আর ধুলা,এ যেন ধুলার রাজ্য! হাসপাতাল এখন যেন নিজেই অসুস্থ! ধুলায় খাচ্ছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা। উদ্বোধনের প্রায় ৪ বছর হতে চললেও নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জনবল না থাকায় স্বাস্থ্য সেবা পুরোপুরি শুরু হয়নি।
ফলে হাতের কাছে সরকারী একটি আধুনিক হাসপাতাল থাকলেও ডাক্তার,নার্সসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবলের অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলার প্রায় ২ লক্ষ মানুষ। আর এই ২ লক্ষ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে মাত্র ২জন চিকিৎসক। অর্থের অভাবে হতদরিদ্র পরিবার জেলা বা বিভাগীয় শহরে চিকিৎসা করাতে পারছেন না অনেক রোগী।
এ বিষয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা দাবি করেছেন,খুব শীঘ্রই হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা যায়,নলডাঙ্গা উপজেলা ৫০ শর্য্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার দীর্ঘদিনেও পুরোপুরি না হওয়ায় স্বাস্থ্য সেবা চালু হচ্ছিল না।
এলাকাবাসীর দাবীর মুখে ও স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর
তৎকালীন এমপি ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে
২০২১ সালের ২৭ জুলাই হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়। তৎকালীন এমপি দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালটি নির্মাণ শেষ করলেও উদ্বোধনের ও জনবল নিয়োগের উদ্যোগ না নেওয়ায় চরম ভোগান্তিতে উপজেলার ২ লক্ষ মানুষ।
উদ্বোধনের পর এখনও ডাক্তার,নার্স ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল এখনও নিয়োগ হয়নি। ফলে হাতের কাছে সরকারী একটি আধুনিক হাসপাতাল থাকলেও ডাক্তার,নার্সসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবলের অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলার প্রায় ২ লক্ষ মানুষ।
অর্থের অভাবে হতদরিদ্র পরিবার জেলা শহরে বা বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে চিকিৎসা করাতে পারছেন না অনেক রোগী। উপজেলা থেকে প্রায় জেলা সদর হাসপাতালটি ১৮-১৯ কিলো দূরত্ব হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় অসুস্থ বয়স্ক রোগীদের।
তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ২জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে হাসপাতালটির শুধুমাত্র বহিঃবিভাগ চালু রেখেছে। এতে জনবলের অভাবে জরুরী বিভাগ ও রোগীদের ওর্য়াড চালু করা সম্ভব হয়নি। বিনা টাকায় সরকারী ছুটির দিন ব্যাতিত প্রতিদিন দুপুর পর্যন্ত বহিঃবিভাগে রোগী দেখা ছাড়া অন্য সেবা প্রদান করা হয়না হাসপাতালটিতে।
এর ফলে এই উপজেলার প্রায় ২ লক্ষ মানুষ সরকারী স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটির ডাক্তার নার্স ও অন্যান্য কর্মচারীর আবাসিক সুবিদার জন্য আলাদা আলাদা আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। মোট ২৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যায়ে হাসপাতালটি নির্মাণ করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আছমা বেগমসহ রোগীরা জানান,হাসপাতালটি ৩ বছর আগে উদ্বোধন হইছে কিন্তু এখনও পুরো দমে চালু হয়নি। এখানে শুধু সামান্য ঔষুধ দেওয়া হয়।
হাসপাতালটি চালু হলে আমাদের নাটোর-রাজশাহী যাওয়া লাগে না। স্থানীয় সিনিয়র গনমাধ্যমকর্মী রানা আহাম্মেদ বলেন,বর্তমানে হালপাতালের অবস্থা বড়ই নাজুক,যেন ধুলার রাজ্য পরিনত হয়েছে। হাসপাতালটি পুরো দমে দ্রুত চালুর দাবি করেন তারা।
এবিষয়ে কথা হয় নলডাঙ্গা হাসপাতালের দায়িত্বরত অফিসার (RMO),আবাসিক মেডিক্যাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ডাঃ মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন আমি আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে বর্তমানে দায়ীত্বে আছি আরেকজন ইউএসও পিওযে ছিলেন ওনি বদলি হয়েছেন।
নতুন ইউএসও পিও হিসাবে নতুন জয়েন্ট করবেন তিনি। আপাতত স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমরা দুজন নিয়োগ প্রাপ্ত হিসাবে দ্বায়ীত্বে আছি। কমেউনেটি মেডেকেল ডাঃ হিসাবে একজন, চতুর্থ শ্রেণীর একজন স্টাফ রয়েছেন ও দুজন আউটসোর্সিং হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন ঔষধ হিসাবে আপাতত সর্দি ও কাশি, জ্বর ডায়াবেটিসের ওষুধ এখান থেকে রোগীদের কে দেওয়া হয়। আর অন্যান্য সকল বিভাগ জনবল সংকটে বন্ধ রয়েছে।
নাটোর সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ মুক্তাদির আরেফীন বলেন,নলডাঙ্গা উপজেলা ৫০ বেডের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জনবল সংকটে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তবে আমি উদ্যতম কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মৌখিক এবং লিখিতভাবে জনবল নিয়োগ ও স্বাস্থ্যসেবা দ্রুত চালু করতে বিষয়টি তাদের নজরে দিয়ে আসছি । জনবল সঙ্কটের কারণে পুরোপুরি স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
আমি এবং নাটোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে উদ্ধতন কৃর্তপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই হাসপাতালটিকে জনবল অনুমোদন দিলেই স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য,২৬ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ২০১৮ সালে হাসপাতালটি নির্মান কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগ। তা শেষ হয় ২০২১ সালের র্মাচ মাসে।