বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান সম্প্রতি এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন,
তিনি কেরানীগঞ্জের হযরতপুরে কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন
“ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনেই ২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডি সংঘটিত হয়, যেখানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এই অপরাধে ফ্যাসিস্ট হাসিনার ৫৭ বার ফাঁসি হওয়া উচিত।”
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদর দফতরে সংঘটিত বিদ্রোহে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তা নির্মমভাবে নিহত হন। এই বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে গভীর শোক ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
সরকার এই ঘটনার তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনলেও বিএনপি বরাবরই দাবি করে আসছে যে, এই বিদ্রোহ সরকারের ইন্ধনে সংঘটিত হয়েছিল।
আমান উল্লাহ আমানের দাবি, শেখ হাসিনার সরকার পরিকল্পিতভাবে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করতে চেয়েছিল এবং সেই লক্ষ্যেই বিডিআর বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র করা হয়। তিনি বলেন, “যখনই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে, তখনই তারা দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র করে। পিলখানার সেই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ তারই প্রমাণ।”
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত বিচার হয়নি। প্রকৃত দোষীদের আড়াল করা হয়েছে, এবং শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ মদদেই এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বিদ্রোহের পর যেসব নিরীহ সেনা সদস্য ও বিডিআর সদস্যকে আটক করা হয়েছিল, তাদের অনেকেই বিচারপ্রক্রিয়ার নামে নির্যাতনের শিকার হন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, বিদ্রোহ একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল, যেখানে দেশি-বিদেশি শক্তি জড়িত ছিল। সরকার সঠিকভাবে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছে বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
তবে বিএনপি নেতারা বারবারই বলে আসছেন যে, বিদ্রোহের মূল হোতাদের আড়াল করা হয়েছে এবং এই ঘটনার প্রকৃত বিচার হয়নি। আমান উল্লাহ আমানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন যে, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পিলখানা হত্যাকাণ্ড এখনো একটি বিতর্কিত বিষয়। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুই পক্ষই একে অপরকে দায়ী করে আসছে। তবে এই ঘটনার সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়ে গেছে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?