রাশিমুল হক রিমন, বরগুনা প্রতিনিধি :
স্কুলের দুই শিশু ছাত্রকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক শিশু ছাত্রীর বাবার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত দুই ছাত্রকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত এক ছাত্রের বাবা আজ দুপুরে আমতলী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গতকাল রোববার বিকেলে ছুটির পর ওই শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরছিল। ফেরার পথে চার শিশু শিক্ষার্থী দুষ্টুমি করছিল। ওই সময় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এ বিষয়টি ওই ছাত্রী তার বাবা রাসেল গাজীকে জানায়।
এ ঘটনার জেরে আজ সকাল ১০টার দিকে রাসেল গাজী বিদ্যালয়ে এসে ওই দুই ছাত্রকে ডেকে নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় শিক্ষক শহীদুল ইসলাম এগিয়ে এলে তাকেও অভিভাবক রাসেল গালাগাল করেন। পরে খবর পেয়ে দুই ছাত্রের অভিভাবকেরা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরপরই রাসেল গাজী এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
আহত দুই শিশু ছাত্র বলেন, ‘গতকাল (রোববার) বিদ্যালয় ছুটির পরে আমরা বাড়ি যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে আমাদের সঙ্গে তার (ছাত্রী) কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর আজ তার বাবা আমাদের বিদ্যালয় থেকে ডেকে নিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে।’
দুই ছাত্রের মা বলেন, ‘আমার ছেলে যদি অন্যায় করে থাকে, তাহলে শিক্ষকেরা বিচার করতে পারতেন। শিক্ষকেরা যদি বিচার করতে না পারতেন, তাহলে আমরা বিচার করতাম। কিন্তু কেন আমার ছেলেদের আরেক ছাত্রীর বাবা মারধর করবে? আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘দুই ছাত্রকে ছাত্রী টুম্পার বাবা রাসেল গাজী মারধর করছিলেন। আমি তাঁকে নিষেধ করলে আমাকেও তিনি গালাগাল করেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাসেল গাজী মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে কটূক্তি করায় ওদের কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মেরেছি।’ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, ‘দুই ছাত্রকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এক ছাত্রের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে।’
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। ঘটনা সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।