রাশিমুল হক রিমন, আমতলী প্রতিনিধি:
বরগুনার আমতলীতে দূর-পাল্লার যাত্রীবাহী বাস ইউনিক পরিবহন কাউন্টার দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দা, রামদা, ছেনা ও বগি নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হয়েছে।
আহতদের উদ্ধার করে মুমুর্ষ অবস্থায় পটুয়াখালী ও বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে আমতলী পৌরসভার বটতলা নামক স্থানে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই ঘটনার পর দুপুর থেকে বটতলায় অবস্থিত ঢাকাসহ দেশের সকল দূর পাল্লার পরিবহনের কাউন্টার ৪ ঘটা বন্ধ ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্র জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দূরপাল্লার পরিবহন ইউনিক বাস কাউন্টার দখল নিতে উপজেলা যুবদল আহবায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর সামসুল হক চৌকিদার ও পৌর বিএনপি ও যুবদলের আহবায়ক কবির উদ্দিন ফকিরের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষ ধারালো দা, রামদা, ছেনা, বগি ও লাঠিসোটা ব্যবহার করায় পৌর শহরের বটতলা থেকে নতুন বাজার চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ওই সময় আতঙ্কিত মানুষজন দৌড়ে পালিয় যায় এবং ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদে চলে যান।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১১জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা হলো ফরহাদ ফকির (৩২), রাহাত ফকির (২৮), মিজানুর রহমান মোল্লা (৪৮), সাইফুল ইসলাম (৩৮), বায়েজিদ (৩০), আলী হাসান (৩২) মো. ইছা (২৪), লিমন মৃধা (২৪), সামসুল হক চৌকিদার (৪৬), আলামিন ফকির (৩৪) ও বেল্লাল (৩১)।
আহতদের প্রথমে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৮ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৩ জনকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
সংঘর্ষের পর আমতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বিভিন্ন রুটে চলাচলরত অর্ধশতাধিক বাস কাউটার বন্ধ হয় যায়। দুপুর ১২ থেকে ৪টা পর্যন্ত কাউন্টারগুলো বন্ধ ছিলো।
আহত উপজেলা যুবদলের এক নম্বর সদস্য, সাবেক কাউন্সিলর ও সাবেক শ্রমিকদল সভাপতি সামসুল হক চৌকিদার অভিযোগ করে বলেন, দূর পাল্লার ইউনিক বাস কাউটারটি আমার নামে।
এ নিয়ে দু’দফায় সালিশ বৈঠকও হয়েছে। তারপরেও শুক্রবার রাতে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কবির ফকিরের নেতৃত্বে তার লোকজন কাউন্টারের তালা ভেঙ্গে ল্যাপটপ এবং টিকেট নিয়ে যায়। শনিবার দুপুরে তারা আবারও কাউন্টারটি দখল নিতে গেলে আমাদের লোকজন বাঁধা দেয়। তখব তারা আমাদের তিন জন কর্মীকে কুপিয়ে জখম করে। তিনি আরো বলন, রামদার কোপে আমার ডান হাতের একটি আঙ্গুলও কেটে গেছে।
উপজেলা যুবদল ও পৌর বিএনপির আহবায়ক কবির উদ্দিন ফকির সামসুল হক চৌকিদারের আনা অভিযাগ অস্বীকার করে বলেন, ইউনিক কাউন্টারটি আমাদের পক্ষের লোকজনের। আমাদের লোকজন কাউন্টার চালাচ্ছিল। আজ দুপুরে সামসুল হক চৌকিদার প্রায় দুই থেকে আড়াই শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ইউনিকসহ বিআরটিসি কাউন্টার দখল নিতে গেলে আমাদের লোকজন বাঁধা দেওয়ায় আমাদের ৮ জনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তাদেরকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ওই ঘটনায় মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।