পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা অনার্স কামিল মাদ্রাসায় ফাজিল পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন জোটবদ্ধ শিক্ষকদের সহায়তায় প্রকাশ্যে নকলের মহোৎসব চলার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে আরবী প্রথম পত্র পরীক্ষায় নকলে সহায়তার দায়ে কর্তব্যরত দুই হল পরিদর্শক কে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এসময় মো. আরীফ হোসেন নামের এক পরীক্ষার্থীকে নকল করার দায়ে কেন্দ্র পরিদর্শক উপজেলা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আলম ওই পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করেন । অব্যাহতিপ্রাপ্ত পরিদর্শকরা হলেন, বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম ও ধানীসাফা সালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক নুর মোহাম্মাদ।
জানা গেছে , মঠবাড়িয়া সদর হতে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দুরে প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা অনার্স কামিল মাদ্রাসা পরীক্ষাকেন্দ্রে আরবী প্রথম পত্র পরীক্ষায় উপজেলার সাতটি মাদ্রাসার ১৬২ জন শিক্ষাথী পরীক্ষায় অশংগ্রহণ করে। পরীক্ষা শুরুর পর জোটবদ্ধ শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের অবাধে নকল করার অনৈতিক সুবিধা দিচ্ছেন এমন খবররের ভিওিতে সেখানে ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট ভার্সনের গণমাধ্যমকর্মীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দায়িত্বরত শিক্ষকদের নকলের মহোৎসবের প্রশ্ন করলে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা শিক্ষকরা গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমূল আচরণ করেন।এরপর পরীক্ষাকক্ষে অবাধে নকলের বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিট্রেটকে গণমাধ্যমকর্মীরা অবহিত করলে তিনি কেন্দ্র পরিদর্শণ করে অভিযুক্ত দুই হল পরিদর্শক কে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেন। এছাড়া এক পরীক্ষার্থীকে নকল করার দায়ে বহিস্কার করেন।
অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম প্রথমে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. নজরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। কিন্তু সাত প্রতিষ্ঠানের মাদ্রাসা শিক্ষকরা জোটবদ্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তা বাতিল করে তাদের মনোনীত তদারকি কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু নির্বাহী কর্মকর্তা তা মেনে না নিয়ে সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। পরে মাদ্রাসা শিক্ষকরা জোটবদ্ধ হয়ে পিরোজপুর জেলাপ্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়ে নিজেদের মনোনীত উপজেলা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কর্মকর্তাকে তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেন। এছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রে নকলের অবাধ সুবিধার জন্য শিক্ষকরা জোটবদ্ধ হয়ে পরীক্ষায় অবাধে নকলের সুবিধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাইসুল ইসলাম মাদ্রাসা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া এক পরীক্ষার্থীকে নকল করার দায়ে বহিস্কার করা হয়েছে। কেন্দ্র সচিব সহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্র নকল মুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসক আবদুল কাইয়ূম মাদ্রাসা পরীক্ষাকেন্দ্রে কিছু অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত করতে প্রশাসনিক কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে।